বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা আজ (বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজাকে ঘিরে ভোর থেকেই জাতীয় সংসদ ভবনসংলগ্ন পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ; সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।
এর আগে সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়ার মরদেহ বের করা হয়। প্রাথমিকভাবে মরদেহ গুলশানের দীর্ঘদিনের বাসভবন ফিরোজায় নেয়ার কথা থাকলেও পরে মরদেহবাহী গাড়িবহর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গুলশান-২ এর নর্থ অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবনে নেয়া হয়।
সকাল ৮টা ৫৩ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মরদেহ বের করা হয় এবং সকাল ৯টা ১৬ মিনিটে তা গুলশানের বাসভবনে পৌঁছায়। সেখানে কিছু সময় মায়ের কফিনের পাশে অবস্থান করেন তারেক রহমান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি কফিনের পাশে বসে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। সে সময় বাসভবনে এক হৃদয়বিদারক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরে মরদেহবাহী গাড়িবহর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের উদ্দেশে রওনা হয়।
কনকনে শীত, ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করেই প্রিয় নেত্রীর শেষ বিদায়ে অংশ নিতে মানুষ ছুটে আসছেন। দেশের অনেক অঞ্চলে সূর্যের দেখা না মিললেও শীতের প্রকোপ ঠেকাতে পারেনি শোকাহত মানুষকে। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে আসা ষাটোর্ধ্ব হাজী হাসানুর রহমান বলেন, ‘খালেদা জিয়া রাজনীতি করলেও মানুষের সঙ্গে কখনও প্রতারণা করেননি। উনার মুখের কথা আর অন্তরের কথা এক ছিল। আমি জীবনে কোনো দিন ধানের শীষ ছাড়া ভোট দিইনি।’
বুধবার সকাল থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও আশপাশের পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি আরও বাড়তে থাকে। লাখো মানুষ চোখের জলে বিদায় জানাচ্ছেন তাদের প্রিয় নেত্রীকে।
জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, জানাজা উপলক্ষে কোনো গাড়িকে মিরপুর সড়ক ব্যবহার করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের আড়ং সংলগ্ন একটি প্রবেশপথ সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ রাখা হলেও খামারবাড়ি ও বিজয় সরণি এলাকার একাধিক বিকল্প পথ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক, বাস ও ট্রেনে করে নেতাকর্মীরা জানাজাস্থলে উপস্থিত হচ্ছেন। কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কারও হাতে দলীয় পতাকা, আবার অনেকের হাতে কালো পতাকা দেখা গেছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

