সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে এই প্রথম লবণাক্ত ও জলমগ্ন সহিষ্ণু ধানের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) এক অনুষ্ঠানে এই জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় হঠাৎ বন্যা ও লবণাক্ততা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কার্যকর উপায় হচ্ছে লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন। এ লক্ষ্যে বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলামের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী প্রায় এক দশক ধরে কাজ করে চলেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায়, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) থেকে সংগৃহীত ধানের বিভিন্ন অ্যাডভান্স লাইন থেকে নানাবিধ গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ব্রিডিং লাইন আরসি-২৫১ শনাক্ত করে।
তিনি বলেন, বিনা এ ধানকে একদিকে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে আকস্মিক বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য জাত হিসেবে (বিনাধান-২৩) ছাড়করণের লক্ষ্যে নানামুখী গবেষণা পরিচালনা করেছে, অন্যদিকে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার করে আরোপিত মিউটেশনের (Induced Mutation) মাধ্যমে এ ধানের কৌলিতাত্ত্বিক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। এ গবেষণায় বিভিন্ন মাত্রার গামা রেডিয়েশন প্রয়োগ করে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মিউট্যান্ট সৃষ্টি করে তা থেকে নানামুখী পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে M6 জেনারেশনে তিনটি উন্নত মিউট্যান্ট শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাপ্ত মিউট্যান্টগুলো প্যারেন্ট অপেক্ষা উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন, লবণাক্ততা ও ১৫ দিন জলমগ্নতা সহিষ্ণু।
বিনা তার প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই আরোপিত মিউটেশনের মাধ্যমে ফসলের নানা জাত উদ্ভাবন করেছে। এসব গবেষণায় আরোপিত মিউটেশনের প্রভাবে ফসলের ফেনোটাইপের কাঙ্খিত পরিবর্তন দেখে উন্নত জাত শনাক্ত করা হতো কিন্তু জিনোমের কোথায় ডিএনএ বিন্যাসের পরিবর্তনের জন্য এমন কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হলো তার ব্যাখা প্রদান করা সম্ভব হতো না।
এ লক্ষ্যে ২০১৯ সালে এই গবেষণায় প্যারেন্ট ও নির্বাচিত তিনটি মিউট্যান্ট ধানের জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন হয় যা বাংলাদেশে প্রথম।
রেডিওটুডে নিউজ/এসএস