জাতীয় স্টেডিয়ামে ফেরাটা সুখের হলো না বাংলাদেশের মেয়েদের। দুর্দান্ত খেলার পরেও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের শুরু তাই হার দিয়েই হলো স্বাগতিকদের।
এক যুগ পর জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলতে নেমে দারুণ গোছানো ফুটবল উপহার দেন ঋতুপর্ণা চাকমা-মারিয়া মান্দারা।
তবে আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়ার জন্য যা দরকার সেই গোলের দেখাই পায়নি বাংলাদেশ। একাধিক সুযোগ পাওয়ার পরেও তাই সমতায় ফেরা হয়নি বাংলাদেশের।
সর্বশেষ ২০১৩ সালের ২৫ মে ফিলিপাইনের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের পর আজ প্রথমবার জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলতে নামেন মেয়েরা। ঘরের মাঠে ফিরে ষষ্ঠ মিনিটে গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র।
ডান দিক থেকে করা তার ক্রসে বলে মাথাটা ছোঁয়াতে পারলেন না মনিকা চাকমা। ফিরতি মিনিটে আবারও দারুণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণা চাকমার কর্নারে শামসুন্নাহার তার হেডটা জালে রাখতে পারলেই হতো। তবে অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
পরে বল পজিশনে রেখে আরো কয়েকটি আক্রমণের চেষ্টা করলেও ফাইনাল থার্ডে গিয়ে মালয়েশিয়ার রক্ষণভাগ ভাঙতে পারেননি ঋতুপর্ণা-মারিয়া মান্দারা। উল্টো ২৯ মিনিটে গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ।
গোলটিতে অবশ্য বড় ভুল করে বসলেন রুপনা চাকমা। সুইপার গোলরক্ষক হতে গিয়ে নিজের দলকে গোল হজম করান। প্রতিপক্ষের আক্রমণ নসাৎ করতে ডি বক্সে ছেড়ে উপরে উঠলে তাকে কাটিয়ে ফাঁকা গোলবারে বল পাঠিয়ে দেন ফরোয়ার্ড নুর আইনশা।
বিরতির পরও গোছানো ফুটবলের পসরা সাজায় বাংলাদেশ। তবে ম্যাচে ফেরার জন্য যা প্রয়োজন সেই সোনার হরিণ খ্যাত গোল পাওয়া হয়নি। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না পারার আক্ষেপের বিপরীতে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগও বেশ জমাট বেঁধে ছিল।
৬৮ মিনিটে মোসাম্মৎ সাগরিকা যে ভুলটা করলেন তার যেন কোনো ব্যাখ্যাই হয় না। ফাঁকায় থেকেও পোস্টের বাইরে হেড নেন তিনি। বাঁদিক থেকে মুখে খাবার তুলে দেওয়ার মতো ক্রস করেছিলেন ঋতুপর্ণা। দুই মিনিট পরেই লিড বাড়ানোর দারুণ সুযোগ পায় মালয়েশিয়া। তবে গোলবার ছেড়ে বেরিয়ে এসে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের শট নেওয়ার আগে ধরে ফেলেন গোলরক্ষক রুপনা।
৮৫ মিনিটে জটলার মধ্যে থেকে একটা শট নিয়েছিলেন তহুরা খাতুন। শটটিতে পাওয়ার না থাকায় জালে জড়ানোর আগে মালয়েশিয়ার গোলরক্ষক নুরুল আজুরিন ধরে ফেলেন। অন্যদিকে যোগ করা সময়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় গোল হজম করা থেকে বাঁচান রুপনা। মালয়েশিয়ার এক খেলোয়াড় ওয়ান টু ওয়ান সিচুয়েশনে শট নিলে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক।
যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তেও গোল শোধ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সতীর্থর ক্রসটা নাগাল পাননি সাগরিকা। ফিরতি মিনিটে প্রতিপক্ষের কয়েকজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে বাংলাদেশকে যখন সমতায় ফেরার মঞ্চ তৈরি করলেন মারিয়া। ঠিক সেই মুহূর্তে মালয়েশিয়ার গোলরক্ষক মারিয়ার জাদুকরী মুহূর্তটাকে পূর্ণতা দিল না। পরে ভালো খেলার পরেও আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছাড়েন কোচ পিটার বাটলারের শিষ্যরা।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

