কানপুর টেস্টের দুইদিন বৃষ্টি ও ভেজা আউটফিল্ডের কারণে পরিত্যক্ত হওয়ার পর সবাই ধরেই নিয়েছিল, এই ম্যাচ ড্রয়ের দিকেই যাচ্ছে। কারণ প্রথম দিনের ৩৫ ওভারের পর চতুর্থ ও পঞ্চম দিন হিসেব করলে কানপুর টেস্ট কার্যত পরিণত হয় আড়াই দিনে। এমন সুযোগ পেয়েও ভারতের বিপক্ষে লড়াই করতে পারেননি শান্তর দল। ঠিকই এই টেস্টের ফল বের করে দেখিয়েছে ভারত।
দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭.২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়েই সেটা ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। ভারত ৭ উইকেটে দ্বিতীয় টেস্ট জেতায় দুই ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এর আগে চেন্নাই টেস্টেও সফরকারীদের হারতে হয়েছিল ২৮০ রানের বড় ব্যবধানে। টেস্টে ক্রিকেটের ইতিহাসে এ নিয়ে পঞ্চমবার ভারতের কাছে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ।
কানপুর স্টেডিয়ামে রেকর্ড রানতাড়া করে জিততে হতো ভারতকে। তবে ভারতের জন্য সেই রেকর্ডটাও আহামরি কিছু ছিল না। গ্রিন পার্কে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এতে মাত্র ৯৫ রানের লক্ষ্য পায় ভারত। এই মাঠে এর আগে সর্বোচ্চ রানতাড়ার রেকর্ড ৮২। এবার ৯৫ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নতুন রেকর্ড করেছে ভারত।
ভারতের জন্য মামুলি লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে ৮ রান করে আউট হন রোহিত শর্মা। তৃতীয় ওভারে মিরাজের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ হন ভারতীয় অধিনায়ক। শুভমান গিলকেও (১০ বলে ৬) এলব্ডিব্লিউ করেন মিরাজ। এরপর ৪৫ বলে ৫১ রান করে তাইজুলের বলে সাকিবের ক্যাচ হন জয়সোয়াল। জয়ের জন্য তখন দরকার মাত্র ৩ রান। এরপর বিরাট কোহলি ও ঋষভ পন্তের ব্যাটে জয় নিশ্চিত করে ভারত। বাংলাদেশের দেওয়া ৯৫ রানের লক্ষ্য ১৭.২ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেছ ভারত। ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি, ৪ রানে অপরাজিত পন্ত।
এর আগে মঙ্গলবার কানপুর টেস্টের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার মুমিনুল ও সাদমান। তবে দিনের শুরুতেই ভেঙে যায় এই জুটি। ৮ বলে মাত্র ২ রান করে অশ্বিনের শিকার হন মুমিনুল।
মুমিনুলের বিদায়ের পর জুটি গড়েন টাইগার শান্ত ও সাদমান। এই জুটতে ভর করে ভারতের ৫২ রানের লিড টপকে নিজেরাই লিড নিতে থাকে বাংলাদেশ। তবে দলীয় ৯১ রানে শান্তর বিদায়ে ভেঙে যায় ৫৫ রানের এই জুটি। ৩৭ বলে ১৯ রান করে জাদেজার বলে বোল্ড হন শান্ত। এরপরই ব্যাটিং ধসের শুরু। একে একে ফেরেন সাদমান, লিটন ও সাকিব। সাদমান অর্ধশতক তুলে, লিটন ৮ বলে ১ ও খালি হাতেই ফেরেন সাকিব। খুব সম্ভবত শেষ টেস্ট ইনিংস খেলে ফেললেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। এতে ৩ উইকেটে ৯১ রান থেকে স্কোরকার্ড আপডেট হয় ৭ উইকেটে ৯৪ রানে।
লিটন সাকিবদের পথ ধরে ফেরেন মিরাজও। দশম উইকেট জুটিতে খালেদ আহমেদকে নিয়ে লড়াই করার চেষ্টা করেছিলেন মুশফিক। তবে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রান তুলতেই সবকটি উইকেট হারায় সফরকারীরা। এতে ৯৪ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
এর আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ২৩৩ রানে অলআউট করে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। ব্যাটিংয়ে নেমেই বাংলাদেশের বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালাতে থাকেন ভারতীয় ব্যাটাররা। তবে সাকিব-মিরাজের ঘূর্ণিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম