
চীন কমিউনিস্ট রাজনীতিকে দেশ ও দেশের বাইরের জনমানুষের মনোজগতে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে 'লাল পর্যটন'র দিকে নজর দিয়েছে। কমিউনিজম ও কমিউনিস্ট নেতারা কীভাবে চীনের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন, রাখছেন—তা তুলে ধরা হচ্ছে পর্যটকদের সামনে। চীন সম্প্রতি জনপ্রিয়তা পেতে থাকা 'লাল পর্যটন' শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির জন্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে গুরুত্ব বহন করে, এরকম কিছু এলাকাকে 'লাল পর্যটন কেন্দ্র' হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। সেসব এলাকায় কর্মরত এক শ জন নির্বাচিত ট্যুর গাইডকে সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাজধানী বেইজিং শহরে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, এ প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদেরকে লাল সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে গড়ে তোলা। লাল পর্যটনের ধারণাটি ২০০৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পর্যটন পরিকল্পনার অংশ করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারির সময় স্থানীয় পর্যটকদের মধ্যে নতুন করে আগ্রহের জন্ম দেয়।
বিভিন্ন বিশ্লেষক ও ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, 'লাল পর্যটকদের' বেশিরভাগেরই বয়স কম। বিভিন্ন ভ্রমণ প্ল্যাটফর্মের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মে দিবসের সময় ওয়েব সার্চ ও বুকিং দেওয়া লাল পর্যটকদের ৪০ শতাংশেরই বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
উন্নত অবকাঠামো ও সেবার মান, সৃজনশীল স্মারক এবং প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে লাল পর্যটন কেন্দ্রগুলো তরুণদের কাছে বেশি আকর্ষণ জাগাতে পেরেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জাতিগত ঐতিহ্য ও নিজস্বতার বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে।
লাল পর্যটনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন ট্যুরিস্ট গাইড চাং ইওয়েন বলেন, 'তরুণ প্রজন্ম আজকাল অধিক পরিমাণে গর্বিত ও আত্মবিশ্বাসী এবং তারা আমাদের দেশ ও জাতিগত সত্ত্বার সঙ্গে গভীর একাত্মতা অনুভব করে।' তিনি আরও বলেন, 'তারা জানতে চায় কীভাবে চীন একটি গরিব দেশ থেকে আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছে।'
চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের একজন অধ্যাপক লি বলেছেন, 'তরুণরা দেশীয় পণ্য ব্যবহার করতে চায় এবং নিজের দেশকে আরও ভালো করে চিনতে চায়।'
চীনের লাল পর্যটনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে দারিদ্র্য বিমোচন, পল্লী উন্নয়ন, কৃষি খাতের ক্রমবিকাশ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম