নভোচারীদের নিরাপদে ফেরাতে যেভাবে প্রস্তুতি নেয় চীনের উদ্ধারকারী দল

মঙ্গলবার,

০২ ডিসেম্বর ২০২৫,

১৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

মঙ্গলবার,

০২ ডিসেম্বর ২০২৫,

১৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

Radio Today News

নভোচারীদের নিরাপদে ফেরাতে যেভাবে প্রস্তুতি নেয় চীনের উদ্ধারকারী দল

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৫:৫৫, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

Google News
নভোচারীদের নিরাপদে ফেরাতে যেভাবে প্রস্তুতি নেয় চীনের উদ্ধারকারী দল

সম্প্রতি পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন চীনের শেনচৌ-২০ মিশনের তিন নভোচারী। নভোচারীরা যাতে নিরাপদে পৃথিবীতে অবতরণ করতে পারেন—এ প্রতিশ্রুতিতে রাত–দিন কঠোর অনুশীলন করেছিলেন চীনের গ্রাউন্ড সার্চ দলের কর্মীরা। শীতল মরু, অন্ধকার রাত ও একরাশ ধুলো—সব কিছু জয় করেছেন তারা। শেষ পর্যন্ত নিরাপদেই ঘরে ফিরেছেন শেনচৌ–২০ এর নায়কেরা। 

মহাকাশ থেকে ফিরে আসাটা চাট্টিখানি কথা নয়। হিসাব নিকাশে সামান্য ভুলচুক হলেই ঘটতে পারে মহাবিপর্যয়। অবতরণের সময় মহাকাশযানে বসে থাকা ছাড়া বিশেষ একটা কিছু করার থাকে না ভেতরে থাকা নভোচারীদের। আর এই পুরোটা সময় তাদের ভরসার জায়গাটি হলো পৃথিবীতে থাকা এয়ার ও গ্রাউন্ড সার্চ টিম।

কদিন আগে চীনের শেনচৌ–২০ মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরেছেন নিরাপদে। তারা যেন ক্যাপসুল থেকে তাদের বাড়ি পর্যন্ত নিরাপদে ফিরতে পারেন, সে জন্য অনেকদিন ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছে উদ্ধারকারী দল। 

টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর চীনের ইনার মঙ্গোলিয়ার তোংফেং ল্যান্ডিং সাইটে রাতের আঁধার,  প্রচণ্ড ঠান্ডা ও জটিল ভূপ্রকৃতির মাঝেই চলে একের পর এক মহড়া।

এয়ার সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমের ওয়াং পাইলট ওয়েনচুয়ান জানালেন, ‘রাতে শেষ ২০–১০ মিটার নামার সময় ধুলো আর আমাদের লাইট মিলিয়ে এমন এক আলোর পর্দা তৈরি হতো যে কিছুই দেখা যেত না। সেই ২০ সেকেন্ডে আমরা পেছনের দরজা খুলে নেভিগেটর ও মেকানিককে বাইরে ঝুঁকে দেখে নিশ্চিত হতে হতো যে ক্যাপসুল ঠিকভাবে নামছে।’

শেনচৌ–২০ মহাকাশযানে কক্ষপথের ক্ষুদ্রাকৃতির যন্ত্রাংশের আঘাত লাগায় ৫ নভেম্বরের ফেরার দিনক্ষণ পিছিয়ে যায়। এতে করে গ্রাউন্ড সার্চ টিমকে আরও নিখুঁতভাবে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হয়। 

কঠিনতম পরিস্থিতি ধরে এসব মহড়ায় ত্বরিত ভূসংস্থান নেভিগেশন, হেলিকপ্টারের নিখুঁত অবতরণ, রশি বেয়ে নামা এবং এমনকি মরুভূমিতে পানিতে উদ্ধার অভিযান—সবই অনুশীলন করা হয়। 

রিসার্চ টিমের সদস্য ফেং ই জানালেন, ‘যা যা মাথায় আসবে, আমরা সেটারই প্রস্তুতি নিই। হেলিকপ্টার নামতে না পারলে আমরা দড়ি বেয়ে নামব। আবার গোবি মরুভূমিতে ডুবুরির দরকার হবে কেন? কারণ এখানে আছে  হেইহে নদী, জলাধার আর ছোট লেক আছে। এক–দশ হাজার সম্ভাবনাও থাকলে আমরা তার অনুশীলন করি।’

ল্যান্ডিং এলাকার চারদিকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চলে একাধিক হেলিকপ্টার সমন্বিতভাবে টহল দেয়।

পাইলট তাং জিফেং জানালেন, ‘আমরা ল্যান্ডিং জায়গাকে ঘিরে পাঁচটি হেলিকপ্টারকে বর্গাকারে বিভিন্ন উচ্চতায় মোতায়েন করি। এর পরিসর হয় ২৫ কিলোমিটারের মতো। রিটার্ন ক্যাপসুল যত নিচে নেমে আসে, আমাদের ফরমেশন তত ছোট হয়ে আসে।’

১৪ নভেম্বর বেইজিং সময় সকাল ১১টা ১৪ মিনিটে নভোচারী ছেন তোং, ছেন চোংরুই ও ওয়াং চিয়ে চীনের থিয়ানকং স্পেস স্টেশনের সমন্বিত ইউনিট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথিবীতে ফেরার যাত্রা শুরু করেন। বিকাল ৪টা ২৭ মিনিটে প্রধান প্যারাশুট খুলে গেলে গ্রাউন্ড টিম ও এয়ার টিম সম্মিলিতভাবে অবতরণস্থলে পৌঁছায়। 

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের