ঢাকায় চীন ও বাংলাদেশের যৌথ কার্ডিওভাসকুলার ক্লিনিকের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ অ্যান্ড হসপিটালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই যৌথ ক্লিনিকের উদ্বোধন করা হয়। একই অনুষ্ঠানে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টার এবং করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ইয়ুননান ফুওয়াই কার্ডিওভাসকুলার হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর শি চিনইয়াং, ইয়ুননান প্রদেশের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর মা চোওসিন, দুই দেশের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধিরা।
এসময় ইয়ুননান ফুওয়াই কার্ডিওভাসকুলার হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর শি চিনইয়াং বলেন, ‘এই ক্লিনিকটি ধারাবাহিক প্রযুক্তিগত বিনিময় ও রোগীসেবার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যা স্ক্রিনিং, পরামর্শ, রেফারেল এবং দূরবর্তী ফলো-আপ সেবা প্রদান করবে। আমরা স্মার্ট মেডিকেল সিস্টেম ব্যবহার করে মোবাইল মেডিকেল সেবা জোরদার করব এবং যৌথ গবেষণা পরিচালনা করব, যা বাংলাদেশের কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে। স্বাস্থ্য কোনো সীমানা মানে না, আর চিকিৎসা সহযোগিতা আমাদের জনগণের মধ্যে গভীর বন্ধন সৃষ্টি করে। “সহমর্মিতাই চিকিৎসার মূল” — এই মূল্যবোধকে ধারণ করে আমরা বাংলাদেশের অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাব, হৃদরোগ প্রতিরোধে অগ্রগতি অর্জন করব এবং উভয় দেশের মানুষের কল্যাণে অবদান রাখব।’
এই যৌথ ক্লিনিক উদ্বোধন দুই দেশের স্বাস্থ্য সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের জনগণের চিকিৎসা সেবায় তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশার কথা জানান চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, “এটি শুধু একটি নতুন চিকিৎসা প্রকল্পের উদ্বোধন নয়, বরং চীন ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার একটি বড় সাফল্য।”
চীন–বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছরের যাত্রার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘রাজনৈতিক বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দুই দেশের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে। আমরা একসঙ্গে ‘হেলথ সিল্ক রোড’ গড়ে তুলতে চাই, যা দুই দেশের জনগণের জন্য আরও কল্যাণ বয়ে আনবে।’
এসময় হৃদরোগের চিকিৎসায় যেন দেশের বাইরে যেতে না হয় সেজন্য সরকার কাজ করছে জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, দেশের চিকিৎসা খাতে চীন সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও বাড়বে।
পরে এনআইসিভিডি ও ডাব্লিওএফসিএইচ প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক বিনিময় অনুষ্ঠিত হয় এবং যৌথ কার্ডিওভাসকুলার ক্লিনিকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অতিথিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চীন সরকারের উপহার হিসেবে দেয়া সজ্জিত কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সটি জরুরি সেবার সক্ষমতা আরও বাড়াবে এবং এর মাধ্যমে জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সরাসরি প্রয়োজনীয় মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

