অতিরিক্ত তাপ সহনশীল ধানের জিন শনাক্ত ও উন্নত তাপ–সহনশীল জাত উদ্ভাবনে সম্প্রতি বড় সাফল্য পেয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। উচ্চ তাপমাত্রার পরিবেশের সিমুলেশন ঘটিয়ে মাঠপরীক্ষায় তারা ধানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক ফ্যাক্টর শনাক্ত করেছেন, যা তাপ সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়ায় বড় ভূমিকা রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে, একক জিন–সংশোধিত ধান স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০–৬০ শতাংশ বেশি ফলন দেয়। আর দ্বৈত জিন–সংশোধিত লাইনের ফলন হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
বুধবার সেল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি পরিচালনা করেছে চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস (সিএএস)–এর সেন্টার ফর এক্সেলেন্স ইন মলিকিউলার প্ল্যান্ট সায়েন্সেস, শাংহাই চিয়াও থোং বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুয়াংচৌ ল্যাবরেটরির গবেষকেরা।
গবেষকরা জানান, অতিরিক্ত তাপ ধানের পরাগ নষ্ট করে, পরাগায়ন বিঘ্নিত করে এবং দানা ভরাট কমিয়ে দেয়। এ কারণে তাপ সহনশীলতার জৈব–প্রক্রিয়া বোঝা ও নতুন জাত উদ্ভাবন কৃষি বিজ্ঞানের জরুরি কাজ।
গবেষকেরা ধানের ক্ষেত্রে যে দুটি ফ্যাক্টর শনাক্ত করেছেন সেগুলো হলো ডিজিকে-৭ ও এমডিপিডি-১। প্রথমটি এক ধরনের কাইনেজ, যা প্রথমে তাপ সংকেত শনাক্ত করে কোষঝিল্লিতে সতর্কবার্তা তৈরি করে। দ্বিতীয়টি এক ধরনের লিপেজ, যা সেই সংকেতকে সঠিকভাবে নিউক্লিয়াসে পৌঁছে দেয়।
এ দুটি ফ্যাক্টর একসঙ্গে একটি ‘জৈব অ্যালার্ম সিস্টেম’-এর মতো কাজ করে। বাহ্যিক তাপকে রাসায়নিক সংকেতে রূপান্তর করে কোষের কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়—ফলে তাপ–প্রতিরোধী যৌগ তৈরি হয়।
সিমুলেটেড মাঠ পরীক্ষায় দিনে ১–২ ঘণ্টা তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তোলা হয়েছিল এবং রাতে কমানো হয়। ফলাফলে দেখা গেছে ধানের তাপ–সহনশীলতা বেড়েছে, চালের গুণমান উন্নত হয়েছে এবং স্বাভাবিক পরিবেশে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা শুধু ধানের তাপ–সহনশীলতা বৃদ্ধি নয়, বরং গম ও ভুট্টা–সহ প্রধান খাদ্যশস্যের ভবিষ্যৎ উদ্ভাবনের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি দেবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

