জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসে
গতবছর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধক্ষেত্রে সাড়ে আট হাজারের বেশি শিশু সৈনিককে ব্যবহার করা হয়েছে এবং নিহত হয়েছে ২৭০০’র মত শিশু। সোমবার (২১ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে শিশু বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ বিক্ষুব্ধ এলাকায় শিশুহত্যা, তাদের পঙ্গুত্ব বরণ করা, ও যৌন নির্যাতন, অপহরণ করা কিংবা সৈন্য হিসেবে নিয়োগ করা, শিক্ষা এবং চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।
গত সোমবার যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে তাতে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন এসেছে। শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে না এমন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর তালিকায় মিয়ানমার ও সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর নাম উঠে এসেছে। এতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শিশু হত্যা করা এবং যৌন সহিংসতার অভিযোগ। আর সিরিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে শিশু সৈনিক নিয়োগ করা যৌন সহিংসতার পাশাপাশি স্কুল এবং হাসপাতালে হামলার অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে অন্তত ২১ টি স্থানে ১৯ হাজার ৩৭৯ শিশুর ক্ষেত্রে অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২০ সালের শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেশি ঘটেছে সোমালিয়া, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইয়েমেনে।
জাতিসংঘের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে, গত বছর ৮ হাজার ৫২১ জন শিশু সেনা ব্যবহার করা হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। এ সময়ে দুই হাজার ৬৭৪ নিহত এবং ৫ হাজার ৭৪৮ শিশু আহত হয়েছে।
শিশু অধিকার ক্ষুন্ন করছে যুদ্ধরত এমন গোষ্ঠী বা সংস্থার একটি তালিকাও প্রতিবেদনের রাখা হয়েছে। শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টিই মূলত প্রতিবেদনের লক্ষ্য।
যদিও অনেকদিন ধরে এই তালিকাটি নিয়ে বিতর্ক চলছিল। কারণ সৌদি আরব ও ইসরাইল এর পক্ষ থেকে চাপ ছিল যেন তাদেরকে না রাখা হয়।
ইসরাইল কখনোই কালো তালিকায় ছিল না। অন্যদিকে ইয়েমেন যুদ্ধে শিশুদের হতাহতের ঘটনায় প্রথমবারের মতো নাম আসার কয়েক বছর পর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটকে ২০২০ সালের কালো তালিকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বিতর্ক এড়াতে ২০১৭ সালের প্রতিবেদনে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হয়। একই তালিকায় রাখা হয় শিশু সুরক্ষা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়া পক্ষকে, অন্যটিতে থাকে সুরক্ষা পদক্ষেপ না নেয়া পক্ষগুলোকে।