বুধবার,

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২৫ ভাদ্র ১৪৩২

বুধবার,

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২৫ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

নেপালে পার্লামেন্ট ভবনে আগুন, আলোচনায় নতুন প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Google News
নেপালে পার্লামেন্ট ভবনে আগুন, আলোচনায় নতুন প্রধানমন্ত্রী

নেপালের পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। পার্লামেন্ট সচিবালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা পদত্যাগের পর এ ঘটনা ঘটে।

সচিবালয়ের মুখপাত্র একরাম গিরি বলেন, ‘শত শত বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট এলাকায় ঢুকে মূল ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’ এএফপি জানিয়েছে, আগুন দেওয়া হয়েছে সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেও।

ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই-এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, অনেক জনতা পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেছেন। ভবন থেকে ধোয়া বের হচ্ছে। নেপালের স্পেস টিভির সরাসরি সংবাদে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। তাদের হাতে জাতীয় পতাকা। বের হয়েছে মোটর শোভাযাত্রা। অনেকে রং ছিটিয়ে আনন্দ করছেন। 

এদিকে বিক্ষোভের মুখে কেপি শর্মার পদত্যাগের পর নেপালে এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়ে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহকে প্রধানমন্ত্রী করার ব্যাপারে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়েছে। দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের সম্পাদকীয়তেও বালেন্দ্র শাহর নেতৃত্বে নতুন সরকারের রূপরেখা কেমন হতে পারে তা বলা হয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সময় র‌্যাপার ছিলেন বালেন্দ্র শাহ। তিনি বেশি পরিচিত বালেন নামে। পরে রাজনীতিতে জড়ান। গত কয়েকদিন ধরে তরুণদের আন্দোলনের সময়ও তিনি সমর্থন জুগিয়েছেন। কেপি শর্মার পদত্যাগের পর আন্দোলনকারীদের অনেকে তাঁকে নেপালের নেতৃত্ব হাতে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এক্স-এ অনেকে ‘বালেন দাই, টেক দ্য লিড’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করছেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মার পদত্যাগের পর ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে বালেন্দ্র শাহ তরুণদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন। তরুণদের এখন শান্ত থাকতে হবে। আর যাতে প্রাণহানি না ঘটে সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করাটাও জরুরি। কারণ, এগুলো নেপালের জনগণের সম্পদ। শাহ উল্লেখ করেছেন, নেপালকে এখন তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে।

বালেন্দ্র শাহর নেতৃত্বে নতুন নেপালের রূপরেখা শিরোনামের সম্পাদকীয়তে কাঠমাণ্ডু পোস্ট লিখেছে, দেশকে যারা এতদিন ব্যক্তিগত সম্পদ এবং নাগরিককে চাকরের মতো মনে করেছে- সেই পুরনো প্রজন্ম বিদায় নিতে শুরু করেছে। ইতিহাসের প্রতিটি সন্ধিক্ষণে পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেয় নতুন প্রজন্ম। আজ আবারও গণতান্ত্রিক সমাজের স্বাভাবিক নিয়মে জনগণের মধ্য থেকেই উঠে আসছে পরিবর্তনের নেতৃত্ব।

কেপি শর্মা অলি ও তাঁর সহযোগী শেরবাহাদুর দেউবা বা পুষ্পকমল দাহালদের মতো পুরনো প্রজন্মের কেউই আর নতুন নেপালের অংশীদার না। তারা নেপালি জনগণের শোষক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাদের অপরাধ কেবল দেশের সম্পদ লুটপাটেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামা নিরপরাধ তরুণদের গুলি করে হত্যাও করেছে। 

কাঠমান্ডু পোস্ট আরও লিখেছে, প্রতিটি আন্দোলনেরই একটি উদ্দেশ্য ও গন্তব্য থাকে। জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশকে নতুন পথে পরিচালিত করতে অবিলম্বে নতুন পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব দরকার। তরুণদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এবং নেপালি সমাজের অঙ্গীকারকে সম্মান জানাতে হলে নতুন নেতৃত্বের অধীনে পরিবর্তন আসতে হবে। এর জন্য নেপালি সমাজের কাছে অপেক্ষা করার কিংবা হিসাব-নিকাশ করার মতো বিলাসিতার সময় নেই। 

আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা স্পষ্ট করে বালেন্দ্র শাহকে সংকট উত্তরণের আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৯০ ও ২০০৬ সালে শাসনকাঠামো পরিবর্তনের পর তৎকালীন আন্দোলনকারীরাই নতুন নেতৃত্ব বেছে নিয়েছিল। তেমনি এখনকার আন্দোলনকারীদেরও নিজেদের নেতা বেছে নিতে হবে। পাশাপাশি একটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে দেশকে নির্বাচনের পথে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য নতুন প্রজন্মের নেতা হিসেবে বালেনকে তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের