
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি। আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) হামাস নিয়ন্ত্রিত ‘প্রিজনার্স মিডিয়া অফিস’ জানায়, পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহরের পশ্চিমে অবস্থিত ওফার কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের বহনকারী বাসগুলো বেইতুনিয়া শহরে পৌঁছেছে।
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) দুটি বাসে করে ৯৬ জন দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি বেইতুনিয়ায় পৌঁছেছেন।
প্রিজনার্স মিডিয়া অফিস আরও জানায়, চুক্তির আওতায় ১৫৪ জন মুক্ত বন্দিকে মিসরে পাঠানো হয়েছে এবং দক্ষিণ ইসরায়েলের নেগেভ কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ১ হাজার ৭০০-র বেশি বন্দি গাজা উপত্যকায় পৌঁছেছেন।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ‘বর্তমান চুক্তির অধীনে যাবজ্জীবন ও দীর্ঘমেয়াদি সাজাপ্রাপ্ত ২৫০ জন বন্দি এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর গাজা থেকে আটক ১,৭১৮ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’
ইসরায়েলি কারাগার কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে যে, মোট ১ হাজার ৯৬৮ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
আনাদোলু সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদক জানান, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে প্রথম দফায় মুক্তি পাওয়া বন্দিদের চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।
হাজারো ফিলিস্তিনি মুক্ত বন্দিদের স্বাগত জানাতে রাস্তায় ও হাসপাতালের প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। অনেকেই হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তাদের প্রিয়জনদের আগমনের জন্য।
এই মুক্তির ঘটনা ঘটেছে হামাস কর্তৃক ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে হস্তান্তরের পর, যা ছিল যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের অংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপটি কার্যকর হয় গত শুক্রবার, যার লক্ষ্য ছিল টানা দুই বছরের ইসরায়েলি যুদ্ধের অবসান ঘটানো।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৭ হাজার ৮০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। যুদ্ধের ধ্বংসে অঞ্চলটি এখন প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম