যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জোহরান মামদানি, কিন্তু কেন?

বৃহস্পতিবার,

০৬ নভেম্বর ২০২৫,

২২ কার্তিক ১৪৩২

বৃহস্পতিবার,

০৬ নভেম্বর ২০২৫,

২২ কার্তিক ১৪৩২

Radio Today News

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জোহরান মামদানি, কিন্তু কেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:২০, ৬ নভেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৪:২৩, ৬ নভেম্বর ২০২৫

Google News
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জোহরান মামদানি, কিন্তু কেন?

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির অভূতপূর্ব জয় মার্কিন রাজনীতিতে নতুন উচ্ছ্বাস তৈরি করেছে। টিকটক-প্রথম প্রজন্মের কাছে তিনি যেন নতুন ওবামা- তরুণ, আত্মবিশ্বাসী, স্পষ্টভাষী ও পরিবর্তনের প্রতীক। কিন্তু তিনি যত জনপ্রিয়ই হোন, যত সংস্কারই বাস্তবায়ন করুন বা যত ভাইরাল হোন না কেন- একটি বিষয় অপরিবর্তনীয়, আর তা হলো- মামদানী কোনো অবস্থাতেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। কারণটি রাজনীতি, ধর্ম বা মতাদর্শ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান।

উদারপন্থি এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের কাছে মামদানি হলেন আমেরিকান রাজনীতির ক্যারিশম্যাটিক ভবিষ্যৎ। অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিশেষ করে তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য তিনি হয়ে উঠছেন প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের প্রতীক। অনেকে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দেখছেন। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হলেও স্পষ্ট সত্য যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মামদানি কখনও প্রার্থীই হতে পারবেন না।

কোন সাংবিধানিক নিয়ম মামদানিকে বাধা দেয়?
মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় আর্টিকেলের ১ নম্বর সেকশনে বলা হয়েছে- “একজন স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণকারী নাগরিক ছাড়া অন্য কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য যোগ্য হবেন না।’

মামদানি ১৯৯১ সালে উগান্ডার কাম্পালায় ভারতীয়-উগান্ডান পিতামাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৭ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে স্বাভাবিকভাবে মার্কিন নাগরিক হন। অর্থাৎ তিনি জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক নন। এই একটি বিষয়ই তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।

‘স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণকারী’ অর্থ জন্মের সময় নাগরিকত্ব, তা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই হোক বা বিদেশে আমেরিকান পিতামাতার মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য কোথাও অ-আমেরিকান পিতামাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করলে, যুক্তরাষ্ট্রে কতদিন বাস বা মানুষকে কতটা গভীরভাবে উপলব্ধি করে সেবা করা হচ্ছে তা বিবেচ্য নয়।

এই নিয়ম আধুনিক আমেরিকান জীবনের কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে একপাশে সরিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কও প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না এই নিয়মের কারণে। এর আগে আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার ক্যালিফোর্নিয়া শাসন করার পরে এবং কেনেডি রাজবংশে যোগদান করার পরেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। 

এখন সেই অপ্রত্যাশিত তালিকায় যোগ দিয়েছেন মামদানিও। প্রশংসিত, প্রভাবশালী এবং জনপ্রিয় কিন্তু সাংবিধানিকভাবে ওভাল অফিস থেকে তিনি নিষিদ্ধ।

আমেরিকা কি কখনও এই আইন পরিবর্তন করতে পারে?

তত্ত্বগতভাবে এই আইন পরিবর্তন সম্ভব হলেও বাস্তবে তা প্রায় অসম্ভব। ২০০৩ সালে সিনেটর অরিন হ্যাচ এ নিয়ে “ইক্যুয়াল অপরচুনিটি টু গভার্ন অ্যামেন্ডমেন্ট” প্রস্তাব করেছিলেন, কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়। এই বিধান যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাদের বিদেশি প্রভাবের আশঙ্কা থেকে এসেছে এবং দুই শতাব্দী পরও তা বহাল রয়েছে। আইন পরিবর্তন করতে হলে কংগ্রেসে ব্যাপক দ্বিদলীয় সমর্থন এবং ৫০টি অঙ্গরাজ্যের তিন-চতুর্থাংশের অনুমোদন প্রয়োজন, বাস্তবে যা প্রায় অসম্ভব।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের