শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪,

১৫ চৈত্র ১৪৩০

শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪,

১৫ চৈত্র ১৪৩০

Radio Today News

মুদি দোকানী থেকে তিন ভুয়া ওভারসীজের মালিক

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৪ অক্টোবর ২০২১

Google News
মুদি দোকানী থেকে তিন ভুয়া ওভারসীজের মালিক

ছবি: সংগৃহীত

এইচএসসি পাশ সাইফুল ইসলাম ওরফে টুটুল এক সময় মেহেরপুরের গাংনী থানার কামন্দ্রী গ্রামের মুদি দোকানী ছিলেন। এক পর্যায়ে বিদেশে লোক পাঠানো দালালদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে তার। ওই দালালদের মাধ্যমে গ্রামের কয়েকজনকে বিদেশে পাঠান। এরপর অধিক লোভের আশায় মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। নিজেই হয়ে ওঠেন পাচারের মূলহোতা। রাজধানীর বাড্ডায় খুলে বসেন, তিনটি অবৈধ ওভারসীজ এজেন্সি। পরে দেশের বিভিন্ন এলাকার মধ্যপ্রাচ্যে যেতে ইচ্ছুক নারী-পুরুষদের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, ৭ সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)। 

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বাড্ডায় ‘টুটুল ওভারসীজ, লিমন ওভারসীজ ও লয়াল ওভারসীজ’ নামে তিনটি ভুয়া ওভারসীজ এজেন্সিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার অন্যরা হলেন, টুটুলের প্রধান সহযোগী এক সময়ের চা দোকানী তৈয়ব আলী, শাহ্ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন লিমন, মেহেরপুরের মো. মারুফ হাসান, জাহাঙ্গীর আলম ও লালটু ইসলাম, আলামিন হোসাইন, আব্দুল্লাহ আল মামুন।

অভিযানের সময় দুই নারীসহ চার ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ১০টি পাসপোর্ট, ৭টি ফাইল, ৪টি সিল, ১৭টি মোবাইল, ৫টি রেজিস্টার, ব্যাংকের চেক বই, ২টি কম্পিউটার, ৩টি লিফলেট ও নগদ ১০ হাজার টাকা। র‌্যাব বলছে, টুটুল ভুয়া ওভারসীজ কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করে গত ৫-৭ বছরে অন্তত অর্ধশত নারী পুরুষকে বিদেশে পাঠিয়েছে টুটুল। এছাড়াও শতাধিক মানুষের সঙ্গে বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণা করেছে চক্রটি।

বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, এই পাচারকারী চক্রের কিছু সদস্য দেশের বেকার ও অস্বচ্ছল যুবক-তরুনীকে সৌদি আরব, জর্ডান ও লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের বাসা-বাড়িতে লোভনীয় বেতনে কাজ দেয়ার নামে রাজি করিয়ে টুটুল ও তৈয়বের কাছে নিয়ে আসে।

এরপর টুটুল ও তৈয়ব ভিকটিমদের বিদেশে পাঠানোর উদ্দেশ্যে ভুয়া মানি রিসিট দিয়ে ২-৫ লাখ টাকা অগ্রিম নিতেন। পরে চক্রের সদস্যরা ভিকটিমের কাছে নিজেদের উচ্চ শিক্ষিত পরিচয় দিয়ে বাসাবাড়িতে কাজের প্রশিক্ষণ দিতো। চক্রের কয়েকজন সদস্য নিজেদেরকে অফিস স্টাফ হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভিকটিমের পাসপোর্ট বানানোর সব কাগজপত্র সংগ্রহ করতো। পাসপোর্ট অফিসের দালালদের মাধ্যমে পাসপোর্ট করিয়ে আনার পরে ভিকটিমের মনে আর কোনো সন্দেহ কাজ করতো না। পরে ভিকটিমদের লোক দেখানো মেডিকেল সম্পন্ন করা হতো।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, বৈধ ওভারসীজের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে অর্ধশত নারী পুরুষকে চক্রটি সৌদি আরব (জেদ্দা ও রিয়াদ), জর্ডান ও লেবাননে পাঠিয়েছে। সেখানে চক্রটির আলাদা একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। ভিকটিমরা দেশগুলোতে যাওয়ার পর, পাসপোর্ট নিয়ে নেয়া হয়। এরপর নারীদের বিক্রি ও পুরুষদের কম বেতনে অমানবিক কাজ করানো হয়। 

মোজাম্মেল হক বলেন, এ চক্রের বিরুদ্ধে ২০-২৫ জন অভিযোগ করেছে। চক্রটির সাথে বৈধ কোন ওভারসিজ জড়িত সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাদেরই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের