ডিসেম্বরের শীত শীত সকালে বাংলাদেশের পাঁচ তরুণ ব্লগার যখন চীনের ইয়ুননান প্রদেশে পা রাখেন, তখন তাদের চোখে ছিল কৌতূহল। সেই কৌতূহলই ধীরে ধীরে রূপ নেয় বিস্ময়, উপলব্ধি আর গভীর অভিজ্ঞতায়। ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ মাত্র এক সপ্তাহের এই সফর তাদের মনে গেঁথে দেয় ইয়ুননানের মানুষ, সংস্কৃতি আর উন্নয়নের বৈচিত্র্যময় গল্প।
ইয়ুননান মিডিয়া গ্রুপ (ইয়ুননান রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশন)-এর আয়োজনে এই সাংস্কৃতিক বিনিময় সফরে নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের চীনা ভাষার শিক্ষক নিলু আক্তার। ভাষা ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধনে তার ভূমিকা ছিল পুরো সফরজুড়ে পথপ্রদর্শকের মতো।
খুনমিংয়ের সবুজ পাহাড়, চিনিংয়ের ইতিহাস আর ছুচিংয়ের আধুনিক উন্নয়ন—প্রতিটি শহরে ছিল স্বতন্ত্র গল্পবলার পালা। ব্লগাররা হেঁটেছেন সেইসব ঐতিহাসিক স্থানে, যেগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিখ্যাত নাবিক চং হ্যয়ের নাম। ইতিহাসের পাতায় পড়া চরিত্র যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল তাদের চোখের সামনে।
সফরের বড় অংশজুড়ে ছিল আধুনিক ইয়ুননানকে দেখা ও বোঝা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তরুণ শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততা, হাসপাতালের স্মার্ট সেবা, প্রযুক্তি অভিজ্ঞতা কেন্দ্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার—সবই যেন চীনের প্রতি নতুন করে চোখ খুলে দিল ব্লগারদের।
বিশেষ করে আধুনিক কৃষি খামারগুলোতে গিয়ে তারা দেখেছেন, কীভাবে প্রযুক্তি আর পরিকল্পনার সমন্বয়ে কৃষক, উদ্যোক্তা ও সরকার মসৃণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
সবচেয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে ইয়ুননানের মানুষ। আধুনিক শহরের মাঝেও ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা, লোকজ সংস্কৃতি আর জীবনযাত্রার সরলতা মন ছুঁয়ে দিয়েছে ব্লগারদের। তারা অনুভব করেন, এখানে উন্নয়ন মানে শুধু অট্টালিকা নয়, বরং শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত থেকেই এগিয়ে চলা।
সফর শেষে প্রত্যেকেই একমত এই অভিজ্ঞতা তাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি দিয়েছে। এখন তাদের লক্ষ্য ইয়ুননানের এই দেখা-শোনা, শেখা আর অনুভবের গল্পগুলো বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

