মঙ্গলবার,

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২৫ ভাদ্র ১৪৩২

মঙ্গলবার,

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২৫ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি, পুলিশের এজাহারে ভিন্ন কথা

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Google News
আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি, পুলিশের এজাহারে ভিন্ন কথা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন চলাকালে রংপুরে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের শরীরে শটগানের গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত তৈরি হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। 

মৃত্যুর আড়াই মাস পর গতকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত আবু সাঈদের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘শটগানের গুলির আঘাতে আবু সাঈদের শরীরে অসংখ্য ছিদ্র তৈরি হয়।

এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় আবু সাঈদের। এ ছাড়া তার মাথার মধ্যভাগ থেকে পশ্চাদ্ভাগ পর্যন্ত আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
আবু সাঈদ হত্যা মামলার প্যানেল আইনজীবী রোকনুজ্জামান বলেন, ‘মাথার আঘাতের চিহ্ন সুস্পষ্ট। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় শটগানের গুলির ক্ষত।

সব কিছু মিলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রমাণ করে, এটি হত্যাকাণ্ড। ফলে এ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কেউ ছাড় পাবে না।’
এদিকে আবু সাঈদের সহপাঠীরা এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। তারা বলছেন, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও দায়ী।আমাদের দাবি, সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়ায় দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এএসআই মো. আমীর আলী ও সুজন চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে তাদের রংপুর জেলা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি হেডকোয়ার্টার্স আবু বক্কর সিদ্দিক ও পিবিআই পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন। দুটি মামলা এখনো তদন্ত করছে পিবিআই।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শওকত আলী কালের কণ্ঠকে জানান, আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক আদালতে করা হয়। যে ছেলে তার বুক পেতে দিয়ে জীবন দিল তার বিচার সঠিকভাবে হবে না এটা কখনো হতে দেওয়া যাবে না। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষীদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আবু সাঈদ নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়িতদের (শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী) চিহ্নিতকরণ ও শাস্তির ধরন নির্ধারণের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ কমিটিতে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান আহ্বায়ক, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আমির শরীফ সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে খুব কাছ থেকে নিরস্ত্র আবু সাঈদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদের। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গত ১৭ জুলাই তাজহাট থানায় একটি মামলা করে। পরবর্তী সময়ে ১৮ আগস্ট ১০ পুলিশ সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের