
নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখনো ‘রোহিঙ্গা ডেটাবেজ’ ব্যবহার করতে পারছে না, যার মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের তথ্যভাণ্ডারে রোহিঙ্গা রয়েছে কি না স্বয়ংক্রিয় আঙুলের ছাপ শনাক্তকরণ (এএফআইএস) পদ্ধতিতে যাচাই করা সম্ভব হতো। দেশের প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য ইসির কাছে এখনো সরাসরি ব্যবহারযোগ্য নয়।
ইসির এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ডেটাবেজ না পাওয়ার পরও কমিশন সতর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, “প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ আমরা খুলে দিয়েছি। সব জায়গায় ব্যাকডোরের সম্ভাবনা থাকে, তাই মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা হচ্ছে।”
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলেও, ছয় মাস ধরে চলা আলোচনা এবং কারিগরি বৈঠকের পরও ইসি ডেটাবেজ ব্যবহার করতে পারছে না।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের তথ্যভাণ্ডারে ১২ কোটি ৩৭ লাখের বেশি ভোটারের তথ্য রয়েছে। চলতি হালনাগাদ কার্যক্রমে ৪৬ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যারা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ভোটার তালিকাভুক্ত হবেন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাবেন।
নিবন্ধন তথ্য যাচাইয়ে এএফআইসি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যা দ্বৈত ভোটার শনাক্তসহ তালিকার সঠিকতা নিশ্চিত করে। রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ডেটাবেজের অ্যাক্সেস প্রয়োজন। ভোটার তালিকার সঙ্গে আঙুলের ছাপ মিলে গেলে সহজেই বোঝা যাবে কেউ রোহিঙ্গা কিনা।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইন থেকে বাংলাদেশে ঢোকার পর প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বায়োমেট্রিকভাবে নিবন্ধিত হয়েছেন। যদিও ইউএনএইচসিআর মার্চে ডেটাবেজ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল, ইসি এখনও তা ব্যবহার করতে পারছে না।
হুমায়ুন কবীর বলেন, “ডেটাবেজ পেলে যাচাই প্রক্রিয়া অনেক সহজ হতো। এখন আমরা নিজস্ব প্রক্রিয়ায় কাজ করছি, যা কার্যকর হলেও কিছুটা কঠিন।” তিনি ব্যাখ্যা করেন, কক্সবাজারে ভোটার হওয়ার জন্য বাবা-মায়ের এনআইডি, শিক্ষাগত ও জমির তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি সহজ করা হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টধারীরাও এখন এনআইডির জন্য আবেদন করতে পারবে।
রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকাভুক্তি রোধে ইসি সতর্কতা বাড়িয়েছে। হুমায়ুন কবীর বলেন, “সব কিছুতে শতভাগ নিশ্চয়তা নেই, তবে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর ফলে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার প্রবণতা কমেছে।”
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম