মঙ্গলবার,

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

৩১ ভাদ্র ১৪৩২

মঙ্গলবার,

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

৩১ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

‘লাশ পোড়ানোর বর্বরতা শুধু বাংলাদেশ না, সারা দুনিয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন’

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:২৫, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১১:২৬, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Google News
‘লাশ পোড়ানোর বর্বরতা শুধু বাংলাদেশ না, সারা দুনিয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন’

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘আসামিরা পুলিশের গাড়িতে ৬ জনের দেহ পুড়িয়ে এর দায়-দায়িত্ব ছাত্র-জনতার ওপর চাপানোর চেষ্টা ছিল মূল উদ্দেশ্য। আসামিরা (পুলিশ) তাঁদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদ্ধতিগতভাবে ও ব্যাপক রাষ্ট্রীয় মদদে আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র ও সাধারণ জনগণের ওপর গণহারে গুলি চালিয়েছে। মরদেহ পোড়ানোর এই বর্বরতা শুধু বাংলাদেশ না, সারা দুনিয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন।’

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা চাই, এই বিচার জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় এক অধ্যায় হিসেবে অম্লান হয়ে থাকুক। বাংলাদেশে এমন এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করতে না পারে। এই বিচার কেবল একটি মামলার নিষ্পত্তি নয়, এটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি শক্ত বার্তা যে আমরা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সে যত শক্তিশালী হোক না কেন। এই বিচার হবে একটি ইতিহাস। এটি হবে সেই সব মানুষের আত্মত্যাগের সম্মাননা, যাঁরা ন্যায়বিচারের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই ট্রাইব্যুনাল প্রমাণ করবে, বাংলাদেশ একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক এবং আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ রাষ্ট্র।’

আজ রোববার বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। পরে আগামীকাল সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই মামলায় বিচার শুরু হবে।

মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যা ও জখম-সম্পর্কিত যেসব উপাদান প্রসিকিউশন উপস্থাপন করবে, সেগুলো দিবালোকের মতো স্পষ্ট, স্বচ্ছ এবং অকাট্য প্রমাণ; যার ভিত্তিতে এই ট্রাইব্যুনাল ন্যায়সংগত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো ক্ষোভ নেই। আমরা অপরাধের বিচারের জন্য এসেছি। আমাদের দৃঢ়বিশ্বাস, যেসব তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে যাচ্ছি, তা স্পষ্টভাবে দেখাবে—এই অপরাধগুলো ছিল পূর্বপরিকল্পিত, পদ্ধতিগতভাবে ও ব্যাপক সংগঠিত এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পরিচালিত। উদ্দেশ্য ছিল, সাধারণ মানুষের কণ্ঠ রোধ করা, ভয় সৃষ্টি করা এবং জনগণের ন্যায়সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা দমন করা। এসব অপরাধ শুধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়; বরং একটি জাতির স্বপ্ন ও অস্তিত্বের ওপর আঘাত হেনেছে। অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, হাজারো পরিবার চিরতরে ভেঙে গেছে।’

চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আশুলিয়া থানা এলাকায় ২৯ জন নিরীহ নিরস্ত্র আন্দোলনকারীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং শিশুসহ বহু মানুষকে গুরুতর আহত করে। তদুপরি চরম অমানবিক ও নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়ে পাঁচটি মৃতদেহসহ একজন জীবিত ও গুরুতর আহত ব্যক্তিকে পুলিশ ভ্যানে উঠিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।’

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের