প্রশাসনের লোকেরা ‘আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে’— বিতর্কিত এই মন্তব্যের জন্য শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত নোটিশটি তাঁকে পাঠানও হয়েছে। জামায়াতের প্রচার বিভাগ গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানায়।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে দেওয়া নোটিশে বলা হয়, বিগত ২২ / ১১ / ২০২৫ শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে আপনি বক্তব্য প্রদান করেছেন যে, ‘নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয় যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘আপনার এই বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। আমরা বক্তব্যটি দেখেছি, যা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা ও মূল স্পিরিটকে স্পষ্টভাবে ব্যাহত করেছে। আমরা মনে করি, প্রশাসন পূর্ণ পেশাদারিত্বের সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, এখানে আমাদের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে আপনি এই ধরনের সাংগঠনিক ভাবমর্যাদা ক্ষুন্নকারী ও শৃঙ্খলা বিরোধী বক্তব্য। রেখেছেন। যার ফলে আপনাকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি মুহতারাম জামীরে জামায়াতও আপনাকে ডেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন। এতদসত্ত্বেও আপনার মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।’
এই বক্তব্য প্রকাশের পর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, দেশের কূটনৈতিক মহল থেকেও সরাসরি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। একই সাথে দেশ-বিদেশে আমাদের জনশক্তি এবা সাধারণ জনগণের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এই বক্তব্যের কারণে ইতোমধ্যে সংগঠনের ভাবমর্যাদা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা দলীয় গঠনতন্ত্র, নীতি, আদর্শ, শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের পরিপন্থী।
গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘সম্মানিত আমীরে জামায়াতের নির্দেশে আপনাকে এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হচ্ছে যে, কেন আপনার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না— তার লিখিত জবাব আগামী ৭ (সাত) দিনের মধ্যে দিতে হবে। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

