আবারও ভারত সফর বাতিল করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। নয়াদিল্লিতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এ বছর এ নিয়ে তৃতীয়বার ভারত সফর বাতিল করলেন ইসরায়েলি এই প্রধানমন্ত্রী।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এই খবর সামনে এনেছে ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম আই২৪নিউজ–এর খবরে বলা হয়েছে, দুই সপ্তাহ আগে নয়াদিল্লিতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। গত প্রায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক এই হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে নিরাপত্তা মূল্যায়ন শেষ না হওয়া পর্যন্ত নেতানিয়াহুর ভারত সফর আগামী বছরে পিছিয়ে যেতে পারে।
এর আগে খবর ছিল, চলতি বছর শেষের আগেই তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক বরতে নয়াদিল্লি সফর করবেন। তবে এ বছর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভারত সফরের পরিকল্পনা বাতিল করলেন নেতানিয়াহু।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর এক দিনের সফরে ভারতে আসার কথা থাকলেও পরে তা স্থগিত করেন নেতানিয়াহু। তখন তিনি ইসরায়েলে ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পুনর্নির্বাচনের ব্যস্ততাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এর আগে এপ্রিলে নির্বাচন শুরুর আগেও তিনি দিল্লি সফর বাতিল করেছিলেন।
ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর এই সফরকে অনেকেই বিশ্বরাজনীতিতে তার গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। গত জুলাইয়ে তার দল লিকুদ পার্টি প্রচারণায় যে ব্যানার ব্যবহার করেছিল, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর ছবি ছিল। তাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের বড় নেতাদের কাতারে তুলে ধরতে এই প্রচারণা চালানো হয়।
ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রশ্নে নেতানিয়াহুই দেশটির অপরিহার্য নেতা— মূলত এমন ভাবমূর্তিই জোরালো করতে চেয়েছে তার রাজনৈতিক শিবির।
প্রসঙ্গত, নেতানিয়াহু সর্বশেষ ভারত সফর করেছিলেন ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। আর ২০১৭ সালে মোদি গিয়েছিলেন ইসরায়েল সফরে। সেটিই ছিল কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ইসরায়েল সফর।
এছাড়া দুই নেতার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ভারত ও ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমে বরাবরই আলোচনা চলে আসছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও ইসরায়েলের মন্ত্রীদের মধ্যে বেশ কিছু বৈঠক হয়েছে। গত মাসে দিল্লিতে এসে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার। আর গত সপ্তাহেই তিন দিনের জন্য ইসরায়েল সফর করেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
এ অবস্থায় আগামী ডিসেম্বর মাসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সফরে দিল্লি এবং তেল আবিবের মধ্যে কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরও বিস্তৃত আলোচনার সম্ভাবনা ছিল। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগে সফরে আসছেন না নেতানিয়াহু। যদিও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনও ঘোষণা দেয়া হয়নি।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম
