
হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি (ছবি: গোকুল রায়; রেডিও টুডে)
আকস্মিকভাবে উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারনে নজিরবিহীন বন্যার কবলে পড়েছে তিস্তা অববাহিকা। বন্যায় মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে প্লাবিত হয়েছে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামেরে বিস্তির্ণ এলাকা। বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে অন্তত ২০০ ঘরবাড়ি। এতে রোপা আমনসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ৫২ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা ভারত তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
অসময়ে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চর, দ্বীপচর ও তিস্তাপাড়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে লালমনিরহাটের সঙ্গে পাশ্ববর্তী কয়েকটি জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে আমন ধানসহ বিভিন্ন শাক-সবজির ক্ষেত। তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট। ফসলহানির আশংকায় মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিস্তাপাড়ের হাজার হাজার কৃষক।
এদিকে উজান থেকে আসা পানি চাপ কমাতে খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টির সব কয়টি। ব্যারেজের ভাটিতে হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় তিস্তায় আরও পানি বাড়তে পারে বলে আশংকা করছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে বন্যার কারনে ওইসব এলাকায় সৃষ্ট মানবিক সঙ্কট কাটাতে ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের তালিকা করে ত্রাণ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। তবে এবার ত্রাণ দিতে কোনো সমস্যা হবে না।
দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পানি বৃদ্ধি হওয়ার কারণে ভারত থেকে পানি ছেড়ে দিয়েছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে যায়। এদিকে পানি বাড়ার কারণে তিস্তা ব্যারাজ এলাকা ও ফ্লাট বাইপাসটি ভেঙে গেছে। মাইকিং করে স্থানীয়দের সরে যেতে বলা হচ্ছে।
রেডিওটুডে নিউজ/জেএফ/এমএস