শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪,

১৫ চৈত্র ১৪৩০

শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪,

১৫ চৈত্র ১৪৩০

Radio Today News

খুলনায় সাড়ে তিন কোটি টাকার বাঁধ মেরামত প্রকল্প দেড় কোটিতে হাতবদল 

শুভ্র শচীন, খুলনা

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ১৩ অক্টোবর ২০২১

Google News
খুলনায় সাড়ে তিন কোটি টাকার বাঁধ মেরামত প্রকল্প দেড় কোটিতে হাতবদল 

ছবি: রেডিও টুডে

খুলনার কয়রা উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা চুক্তিমূল্যের একটি বাঁধ মেরামত প্রকল্পের কাজ মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে তিন হাত ঘুরে দেড় কোটি টাকায় নিষ্পত্তি হয়েছে। সর্বশেষ ওমর ফারুক নামে স্থানীয় এক শ্রমিক সরদার সর্বনিম্ন দামে কাজটি কিনে নিয়েছেন। এতে নকশা অনুযায়ী মানসম্মত কাজ না হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, 'দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বর্ধন প্রকল্প' এর আওতায় কয়রা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪/১ নম্বর পোল্ডারে ২১শ মিটার বাঁধ মেরামতে সোয়া ৪ কোটি টাকা বরাদ্দে দরপত্র আহ্বান করা হয়। চলতি বছর ১৩ জুন ৩ কোটি ৩০ লাখ ৫৮ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে মেসার্স আরাধনা এন্টারপ্রাইজ নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজের কার্যাদেশ পায়।

কার্যাদেশ পাওয়ার পর তারা প্রথমে সাতক্ষীরার আবদুস সবুর নামে এক ঠিকাদারের কাছে কাজটি বিক্রি করেন। ঠিকাদার আবদুস সবুর বিল্লাল হোসেন নামে এক শ্রমিক সরদারকে ২ কোটি টাকা চুক্তিতে কাজের দায়িত্ব দেন।

বিল্লাল হোসেন স্বল্প ব্যয়ে কাজটি করতে বাঁধের দুইপাশে গর্ত করে মাঝখানে বালু ভরাটের চেষ্টা করলে স্থানীয়দের বাধার মুখে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ওমর ফারুক নামে এক শ্রমিক সরদারের কাছে গোপনে দেড় কোটি টাকায় কাজটি বিক্রি করেন বিল্লাল। বর্তমানে ওমর ফারুক সেখানে শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রকল্পের গাতিরঘেরি এলাকার ভাঙনের পাশে শাকবাড়িয়া নদী থেকে খনন যন্ত্রের মাধ্যমে বালু তুলে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে শ্রমিকরা বস্তায় ভরে দু'পাশ থেকে ভাঙনে ফেলছে। এর একটু দূরে এক্সক্যাভেটরের সাহায্যে বাঁধের নিকটবর্তী স্থান থেকে মাটি কেটে উঁচু করার চেষ্টা চলছে। ভাঙনের কাছাকাছি নদী থেকে বালু তোলায় একদিকে যেমন ঝুঁকি বাড়ছে, তেমনি বাঁধের ঢালের মাটি কেটে উচ্চতা বাড়ানোর চেষ্টায় এর স্থায়িত্ব সংকট দেখা দিয়েছে।

শ্রমিক সরদার ওমর ফারুকের কাছে কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন। পরে মোবাইল ফোনে বিল্লাল হোসেন বলেন, কন্ট্রাক্টর সবুর কাজটি আমাকে দিয়েছেন। তার সঙ্গে আমার ২ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল। এ মুহূর্তে বিশেষ অসুবিধার কারণে কাজটি ওমর ফারুকের দায়িত্বে দিয়েছি।

এদিকে কাজের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরাধনা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহবুবুল হক রিপন ফোনে বলেন, কাজটি আমার লাইসেন্সে হলেও সাতক্ষীরার সবুর কাজটি করছেন। জানতে চাইলে ঠিকাদার আবদুস সবুর বলেন, প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আমাকে কাজটি করার অনুরোধ করা হয়। তাদের অনুরোধ রক্ষায় লোকজন দিয়ে কাজটি করিয়ে নিচ্ছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, এভাবে প্রকল্প হাত বদল হলে কাজের মান কখনও ভালো হতে পারে না। যতটুকু জানি, মূল ঠিকাদারের হাত ঘুরে চতুর্থ ব্যক্তি কাজটি করছেন।

প্রকল্পের পাশে সাইনবোর্ডে বাস্তবায়নকারী বিভাগ হিসেবে সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-২, বাপাউবো, সাতক্ষীরা লেখা থাকলেও ওই বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সাইবোর্ডে ভুল লেখা হয়েছে। প্রকল্পটি মূলত জাইকার, আমরা তদারকির দায়িত্বে আছি মাত্র।

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের