
আমদানির পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস না নেওয়া ৪৭৫ কনটেইনার বোঝাই পণ্য নিলামে তুলছে কাস্টম হাউস। ক্রেতারা দেশের যে কোনো স্থান থেকে এই নিলামে অংশ নিতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে। প্রথম দফায় ১২৫ টির নিলাম এরই মধ্যে ডাকা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আগামীকাল বুধবার (১৬ জুলাই) শুরু হবে আরও ৩৫০ টির নিলাম প্রক্রিয়া।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দরে প্রায় ১০ হাজার নিলাম ও ধ্বংসযোগ্য কনটেইনার রয়েছে। আইনি জটিলতাসহ নানা কারণে এগুলো সরানো যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা এসব কনটেইনার দখল করে আছে বন্দর ইয়ার্ডের বিশাল একটি অংশ। যার কারণে প্রায়ই দেখা দেয় জট। নতুন আমদানি কনটেইনার জাহাজ থেকে নামিয়ে রাখার জায়গা থাকে না। বন্দর কর্তৃপক্ষ আশা করছে, নিলামের মাধ্যমে ৪৭৫ টি কনটেইনার সরানো গেলে একদিকে জায়গা খালি হবে, অন্যদিকে আয় হবে বড় অঙ্কের অর্থ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, 'খালাস না নেওয়া কনটেইনার নিলামে তুলতে আমরা নিয়মিতভাবে কাস্টমসকে চিঠি দিয়ে থাকি। দ্রুত নিলাম হলে বন্দরের অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা খালি হবে। সেখানে আমরা নতুন আমদানি পণ্য রাখতে পারব।'
কাস্টম সূত্র জানান, পণ্য নিলাম হয়ে গেলে খালি কনটেইনারগুলো বন্দর থেকে নিয়ে যেতে পারবেন সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্টরা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার (নিলাম) মো. সাকিব হোসেন জানান, ২০২৪ -২৫ সালে আমদানি করা ১২৫ টি কনটেইনারের নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই লটে ২৪টি মিক্সচার লরিও রয়েছে। আগামী ৩০ জুন জমা পড়া দরপত্র খোলা হবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে পূর্ববর্তী কয়েক বছরের ৩৫০ টি কনটেইনারের নিলাম ডাকা হবে বুধবার। দরপত্র খোলা হবে ৬ আগস্ট। কনটেইনারগুলোতে ফেব্রিক্স, মেশিনারিজ, টাইলস, ইলেকট্রনিক্স ও কেমিক্যালসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য রয়েছে।
জানা গেছে, দ্বিতীয় দফা নিলামে ৩৫০ কনটেইনারে থাকা পণ্যের কোনো ভিত্তি মূল্য থাকবে না। তাই ভিত্তিমূল্যের ৬০ শতাংশ দাম ওঠার বাধ্যবাধকতাও এক্ষেত্রে থাকছে না। সর্বোচ্চ দরদাতা নিলামে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর ডেলিভারি না নিলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিলামে তোলে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। শুল্কায়ন জটিলতাসহ নানা কারণে অনেক সময় আমদানিকারকরা পণ্য ডেলিভারি নিতে পারেন না। সেসব বন্দরের ইয়ার্ড ও শেডে পড়ে থাকে। লোকসানের আশঙ্কায় ওইসব পণ্য পরবর্তীতে আমদানিকারকরা আর নিতে আগ্রহী হন না। এসব পণ্য নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়। ব্যবহারের অনুপযোগী পণ্য ধ্বংস করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। তবে নিলাম প্রক্রিয়া তুলনামূলক ধীর হওয়ায় দিন দিন আমদানি পণ্য ও কনটেইনারের সংখ্যা বাড়ছে। যা বন্দরের জন্য বড় বোঝা বলে মনে করা হয়।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম