
চলমান আন্দোলনের তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবশেষে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। একইসঙ্গে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিও প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে শনিবার (১৮ মে) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। তিনি শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির প্রতি সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পূর্ণ সম্মতির ঘোষণা দেন। এরপর আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন।
অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, আমাদের দাবিগুলো যেহেতু সরকার মেনে নিয়েছে, তাই আমরা এই আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। তবে বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, আন্দোলন চলাকালে শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাসির উদ্দীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আন্দোলনের দাবির বাস্তবায়নের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর ছেড়ে দিতে আহ্বান জানান। পরে তিনি নিজেই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পানি ও কলা খাইয়ে অনশন ভাঙান। রাত পৌনে ১২টার দিকে সব শিক্ষার্থী আন্দোলনস্থল ত্যাগ করেন।
জবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক জানান, আমরা মনে করছি আমাদের দাবিগুলো আদায় হয়েছে। জবি ঐক্য এবং প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করছি।
অন্যদিকে, জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, আমরা লিখিত রূপরেখা চেয়েছিলাম। সেটা না পেলেও ঐক্য ও প্রশাসনের উপর দায়িত্ব দিয়ে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করছি।
এই তিন দাবিতে কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা গণ-অনশন শুরু করেন। পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে চলছিল অবস্থান কর্মসূচি। জুমার নামাজের পর বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম