
বাংলাদেশের বন্যা ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক ২৭০ মিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠন, কৃষি পুনরুদ্ধার ও জীবিকা উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় হবে। বুধবার (১৪ মে) বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পরিষদ এই অনুমোদন দিয়েছে।
এই অর্থে বাস্তবায়ন হবে ‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকভারি, ইমার্জেন্সি প্রিপার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স’ (বি-স্ট্রং) প্রকল্প। এতে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুর্গত এলাকায় গড়ে তোলা হবে টেকসই অবকাঠামো। উপকৃত হবে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ।
প্রকল্পের আওতায় ৭৯টি বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে। এগুলো সাধারণ সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও সংস্কার করা হবে বাঁধ, সড়ক ও সেতু। পুনঃখনন করা হবে খাল। আধুনিক করা হবে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা।
ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের মধ্যে অন্যতম। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ছে। এই প্রকল্প ভবিষ্যতে দেশের প্রস্তুতি আরও জোরদার করবে।
প্রকল্পে গুরুত্ব পাবে জীবিকা উন্নয়ন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দেওয়া হবে নগদ সহায়তা ও অস্থায়ী কর্মসংস্থান। প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ উপকৃত হবে এই কর্মসূচির মাধ্যমে।
৬৫ হাজার কৃষক পরিবারকে দেওয়া হবে জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি, উন্নত বীজ, যন্ত্রপাতি ও সেচ সুবিধা। গড়ে তোলা হবে বীজ গ্রাম, উৎসাহ দেওয়া হবে নারীদের ঘরবাড়ির আঙিনার বাগান চাষে।
বিশ্বব্যাংকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ স্বর্ণা কাজী বলেন, এই প্রকল্প শুধু পুনর্গঠন নয়, বরং দুর্যোগ সহনশীলতা গড়ে তুলবে। দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি কমাবে। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে সমাজে অন্তর্ভুক্ত করবে।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার অনুদান ও সুদমুক্ত ঋণ দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ হয়েছে বিশ্বব্যাংকের সবচেয়ে বেশি সহায়তাপ্রাপ্ত দেশগুলোর একটি।