
‘চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে আমার জীবনে অনেক নতুন সুযোগ এসেছে’—এভাবেই অনুভূতির কথা জানালেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাশা-লি অ্যালেন। সম্প্রতি কেপটাউনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চীনা ভাষা দিবসের উৎসবে অংশ নেন তিনি।
‘চীনা ভাষা: একসাথে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে’—এই প্রতিপাদ্যে গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনের ইজিকো লার্নিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় উৎসবটি। এতে চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক ও একাডেমিক খাতের শতাধিক প্রতিনিধি, পাশাপাশি কেপটাউনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
ইভেন্টটি যৌথভাবে আয়োজন করে ওয়েস্টার্ন কেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট এবং ইজিকো মিউজিয়ামস অব সাউথ আফ্রিকা। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল চীনা সংস্কৃতির নানা আয়োজন—'১০১টি ইচ্ছা: চীনা বর্ণের সৌন্দর্য' শিরোনামের প্রদর্শনী, চীনা বাদ্যযন্ত্র কুছেং পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী চা পান এবং চীনা ক্যালিগ্রাফি অনুশীলন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ইজিকো মিউজিয়ামসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী বংগানি এনধলোভু বলেন, ‘ভাষা শুধু শব্দ নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, ঐতিহ্য—সবকিছুই বহন করে।’
চীনা কনসুলেটের উপ–কনসাল জেনারেল থাং ছাং’আন বলেন, ‘চীনা ভাষা কেবল ভাষাই নয়, এটি একটি সেতু—যা সভ্যতাগুলোকে যুক্ত করে, বোঝাপড়া গড়ে তোলে এবং সংস্কৃতির বিনিময় ঘটায়।’
তিনি বলেন, পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন চীনা সভ্যতা শান্তি, সম্প্রীতি ও সহযোগিতার মূল্যবোধ বহন করে। আর বর্তমান বিশ্বে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বিনিময় পারস্পরিক সম্মান ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাশা-লি অ্যালেন ওয়েস্টার্ন কেপ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। গত দুই বছর ধরে চীনা ভাষা শিখছেন। তিনি বলেন, ‘চীনা অক্ষর শুরুতে কঠিন মনে হলেও পরে দেখেছি কত সুন্দর ও সহজ। এগুলো আসলে এক ধরনের শিল্প।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ভাষা শেখার ফলে আমি চীনা সংস্কৃতি, মানুষ ও তাদের ভাব প্রকাশের ধরন বুঝতে শিখেছি। আমি বন্ধুদেরও বলি যেন তারা চীনা ভাষা শেখে।’
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘চীনা ভাষা শেখার ফলে আমার চাকরি বা ক্যারিয়ারে ভালো সুযোগ আসবে বলেই বিশ্বাস করি। আমি চীনা অক্ষর শেখা চালিয়ে যেতে চাই, কারণ এটা আমার জন্য অনেক দরজা খুলে দিতে পারে।’