বুধবার,

০৯ জুলাই ২০২৫,

২৫ আষাঢ় ১৪৩২

বুধবার,

০৯ জুলাই ২০২৫,

২৫ আষাঢ় ১৪৩২

Radio Today News

স্ত্রীকে গরম তেল ঢেলে হত্যা, স্বামী সজনু মিয়া গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ১৪ অক্টোবর ২০২১

Google News
স্ত্রীকে গরম তেল ঢেলে হত্যা, স্বামী সজনু মিয়া গ্রেফতার

ছবি: সংগৃহীত

যৌতুকের জন্য নিয়মিত চলতো নির্যাতন। সেই সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক ও ভরণপোষনের টাকা না দেয়া পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান স্বর্ণা। এক পর্যায়ে সাভারের জিরানিতে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। কিন্তু স্বামী সজনু মিয়ার তৎপরতা থামেনি। ঠিকানা জোগাড় করে স্বর্ণার কাছে গিয়ে আবার যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু টাকা দিতে অপারোগতা জানালে, ঘুমন্ত স্বর্ণার উপর গরম তেল ঢেলে পালি যায় সজনু মিয়া।

ঘাতক স্বামী সজনু মিয়াকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জামালপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন।

বুধবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে মজনু মিয়া এবং স্বর্ণার তাদের বিয়ে হয়। স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাধা দেয়ায় এবং যৌতুকের দাবিতে প্রায়শই স্বর্ণাকে নির্যাতন করা হতো। এমনকি সজনু মিয়া সংসারের ভরণ পোষণও সঠিকভাবে করত না। এরআগেও যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে গুরুতর জখম করায় মৃত স্বর্ণার দুলাভাই মো. ময়নুল ইসলাম বাদী হয়ে আসামি মজনু মিয়ার বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মজনু মিয়া দুই মাস ১৯ দিন জেল হাজতে থাকেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্ততায় বাদী তার মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
 
কিন্তু কিছুদিন পরে আবারো স্বর্ণার উপরে নির্যাতন শুরু হয়। মজনু মিয়ার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে স্বর্ণা ছয়মাস আগে তার সন্তান নিয়ে বাবা-মার বাড়িতে সিরাজগঞ্জে চলে যান। কিন্তু অভাব অনাটনের কারণে তার ছেলে-মেয়ের মায়ের কাছে রেখে ঢাকার আশুলিয়ায় এসে ডরিন গার্মেন্টেসে পোশাক শ্রমিকের কাজ নেন। কিন্তু সজনু কৌশলে তার স্ত্রীর ঠিকানা জোগাড় করে ঢাকায় এসে অশান্তি শুরু করেন। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করা হলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে স্বর্ণার শরীরে গরম তেল ঢেলে পালিয়ে যান সজনু মিয়া।

রাতেই সহকর্মীরা তাকে সাভার থেকে জামালপুরের সজনু মিয়ার নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন সকালে তাকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় ৫২ শতাংশ দগ্ধ হওয়া স্বর্ণার।

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের