
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন এবং এর কয়েকটি ধারা নিয়ে দেওয়া চূড়ান্ত মত প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ১৩৯ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করা হয়। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর এই রায় ঘোষণা করেন।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারাসহ ৭ক, ৭খ এবং ৪৪(২) অনুচ্ছেদ বাতিল করা হলো। আদালত বলেন, এসব ধারা সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী এবং তাই তা অবৈধ।
তবে আদালত পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী আইন বাতিল করেননি। বরং রায়ে বলা হয়, এই সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত বাকি বিধানগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আগামী জাতীয় সংসদের। সংসদ চাইলে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এসব বিধান পর্যালোচনা, সংশোধন বা পরিবর্তন করতে পারবে।
এছাড়া রায়ে উল্লেখ করা হয়, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে থাকা গণভোটের বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছিল, যা পূর্বে ১৯৯১ সালের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্ত হয়েছিল। আদালত এই বিলুপ্তিকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করে। ফলে ১৪২ অনুচ্ছেদের গণভোট সংক্রান্ত বিধান পুনর্বহাল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এই আইনটি পাস করা হয়।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইনকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি একটি রিট দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১৯ আগস্ট রুল জারি করেন। এরপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় দেন উচ্চ আদালত।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম