
গত কয়েকদিনের টানা অতি ভারী বর্ষণে বাগেরহাটের উপকূলীয় উপজেলা মোংলায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, দোকানপাট, এমনকি মৎস্য ঘের পর্যন্ত তলিয়ে গিয়ে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মোংলা পৌরসভার ২, ৩, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
বর্ষার পানিতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো পানিতে ডুবে গেছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অফিসগামী মানুষদের নানাবিধ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দুর্বিষহ অবস্থায় রয়েছে নিম্নআয়ের দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।
মোংলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মৎস্য ঘেরও তলিয়ে গেছে। চিলা, বুড়িরডাঙ্গা, সুন্দরবন ও মিঠাখালী ইউনিয়নের একাধিক ঘের তলিয়ে যেয়ে ঘের থেকে মাছ বেরিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
চিলা ইউনিয়নের মৎস্যচাষি মজিবর হাওলাদার বলেন, ‘রাতেই হঠাৎ পানি বেড়ে যায়। আমাদের ঘেরের বাঁধ ভেঙে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এখন পথে বসতে হবে।’
একই অভিযোগ করেন সুন্দরবন ইউনিয়নের চাষি আক্তার শেখ। তিনি বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আমরা মাছ চাষ করা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবো।’
এদিকে মোংলা পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ড্রেনেজ সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছিল, তবে অতিবৃষ্টি ও পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক পথগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। তিনি জানান, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নে রয়েছে চরম উদাসীনতা। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তীতে বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিকরা।
স্থানীয়রা দ্রুত পদক্ষেপ ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার দাবি জানিয়েছেন, যাতে করে প্রতিবছর একই দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম