সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। শেখ হাসিনা রায়কে কেন্দ্র করে ভারতীয় নম্বর থেকে প্রসিকিউশন টিমের সদস্যদের ফোনে হুমকি। গতকাল রাত থেকে চিফ প্রসিকিউটরসহ টিমের সব সদস্যকে হুমকি দেওয়া হয়। টিমের সদস্যরা সাংবাদিকদের জানান, গতকাল রাত থেকে আমাদের প্রত্যেককে হুমকি দেওয়া হয়। অকথ্য গালিগালাজ করা হয়।
প্রসিকিউটর তারেক আবদুল্লাহ বলেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকে অজ্ঞাত ফোন নাম্বার থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। আজকেও বেশ কিছু ফোন পেয়েছ অধিকাংশ ফোনকল ভারতের এন্ট্রি কোড ব্যবহার করে করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার শাস্তি হলে আমাদের টিমের কাউকে বাঁচতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, অসংখ্য ফোন পেয়েছি। এক পর্যায়ে ফোন বন্ধ করে দিয়েছি। একই ভাষা, একই কথা। নেত্রীর সাজা হলে আমাদের জীবন শেষ করে দিবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ভীরু, কাপুরুষ ও গণহত্যাকারীদের ভাষা এমনই হয়। এগুলো আমলে নেওয়ার কিছু নেই।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘সুনির্দিষ্ট পাঁচটি’ অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। আজ (সোমবার) মামলার রায়ে জানা যাবে, এসব অভিযোগ কতটা প্রমাণ করতে পেরেছে প্রোসিকিউশন।
গত ১৩ নভেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার এই দিন ধার্য করেছিলেন। মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারাধীন মামলাগুলোর মধ্যে এই মামলার বিচারকাজই প্রথম শেষ হতে যাচ্ছে।
গত ২৩ অক্টোবর প্রোসিকিউশন ও আসামিপক্ষের আইনি যুক্তিতর্ক শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল এ মামলার রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ রাখেন। সেদিন ট্রাইব্যুনাল বলেছিলেন, ‘১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ ঘোষণা করা হবে। তবে সেটা (রায় ঘোষণা) হবে খুব তাড়াতাড়ি।’ সেই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ নভেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল আজ ১৭ নভেম্বর (সোমবার) রায়ের দিন ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাওয়ার পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালের কাছে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের আদেশ চাওয়া হয়েছে প্রোসিকিউশনের পক্ষ থেকে। অন্যদিকে দুই আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন তাদের বেকসুর খালাস চেয়েছেন।
রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে : সাবেক সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ মামলার বিচারকাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং চিফ প্রোসিকিউটর কার্যালয়ের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় মামলার রায় ঘোষণার অংশবিশেষও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছে প্রোসিকিউশন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

