নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ফখরুল ইসলাম মঞ্জুু ওরফে বলি (২৫) নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। সোমবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খালাসী বাড়ির বদিউজ্জামানের ছেলে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) আ ন ম ইমরান খাঁন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত ফখরুল ইসলাম মঞ্জু ওরফে বলি ও তার সহযোগী মিজান নামের এক ব্যবসায়ীকে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দার বাড়ির দরজায় আটক করে মারধর করা হয়। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। তাকে সেখানে আটকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর ৬টার দিকে তার বড় বোন শাহনাজ আক্তার টুম্পার অসুস্থ মেয়েকে দেখতে তাদের বাড়িতে যায় বলি। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিজের বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মান্দার বাড়ির দরজায় পৌঁছলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ১৫ থেকে ২০ জন কিশোর গ্যাং সদস্য সিএনজি অটোরিকশার মধ্যে তাকে কোপ দেয়। তিনি গাড়ি থেকে পড়ে গেলে তারা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতের পরিবারের দাবি- পূর্ব শক্রতার জেরে বলিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, নিহত যুবক একাধিক মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব দাবি করেন, ‘সকালে তার ছেলে মিজানুর রহমান ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে চৌমুহনী বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। পথে উপজেলার হাজীপুরে মনতাজ নামে এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে পৌঁছলে বলি ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন আমার ছেলেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে বলিকে আটক করে গণপিটুনি দিলে তিনি মারা যান। তাৎক্ষণিক ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং নিহত বলির আড্ডা খানায় হামলা চালায়।’
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ বারী বলেন, ‘সন্ত্রাস, অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ নিহত বলির বিরুদ্ধে ৫ থেকে ৭টি মামলা রয়েছে। এলাকায় তার বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জনঅসন্তোষে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। মরদেহ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ ন ম ইমরান খাঁন ঘটনাস্থল থেকে জানান, নিহত বলী ও তার সহযোগী কিরন নামের এক যুবক মিজান নামের এক ব্যবসায়ীকে আটকে মারধর করার সময় স্থানীয় লোকজন তাকে পিটুনি দিলে তিনি নিহত হন। টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

