সোমবার,

০৪ আগস্ট ২০২৫,

২০ শ্রাবণ ১৪৩২

সোমবার,

০৪ আগস্ট ২০২৫,

২০ শ্রাবণ ১৪৩২

Radio Today News

জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরলেন ইসি সচিব

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:০৮, ৪ আগস্ট ২০২৫

Google News
জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরলেন ইসি সচিব

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সবশেষ প্রস্তুমিূলক কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।

সোমবার (৪ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে ব্রিফিংয়ে তিনি কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।

আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ভোটের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করা হতে পারে- এমন পরিস্থিতির মধ্যে ইসির সার্বিক প্রস্ততি তুলে ধরেন ইসি সচিব।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারসহ সব প্রস্তুতি শেষে আগামী রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। তবে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ও তফসিলের দাবি জানিয়ে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব সব ধরনের প্রস্তুতি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

এমন পরিস্থিতিতে তফসিল কবে নাগাদ হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, তফসিল ঘোষণার ব্যাপারটা একান্তভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর। যখনই ইসি সিদ্ধান্ত নেবে আমরা জানাবো। আমাদের সব প্রস্তুতি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। আমাদেরও গোছানোর সময় দিতে হবে, যেগুলো একটু একটু হচ্ছে জানাচ্ছি, যেগুলো চলমান জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে কী আসবে জানাবো।

অক্টোবরের মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে কি না- জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ইসির কিছু কাজ বাকি রাখতে হবে, যেটা অক্টোবরের পরে বলা যাবে।

নিজের কর্মপরিকল্পনা ধরে কাজ এগোনোর কথা জানিয়ে আখতার আহমেদ বলেন, আজই আমি বেশকিছু টাইমলাইন ধরে কথা বলেছি। টাইমলাইন, কর্মপরিকল্পনা, অ্যাকশন প্ল্যান বলেন- কাজের এ ব্যাপ্তিটা আসল। আমি কোন সময়ের মধ্যে ভোটের প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি, কতটুকু এগোচ্ছি। আমার মনে হয়, এ পর্যন্ত সময়সীমা বলেছি, আমাদের বাস্তবায়নের কথা বলেছি।

ইসি সচিব বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা যে টাইমলাইন দিয়েছেন সে অনুযায়ী কাজ করছি। আমরা আমাদের প্রস্তুতি জানাচ্ছি। নির্বাচন কমিশন যেসব সিদ্ধান্ত নেয় তা তুলে ধরা হচ্ছে।

দলের অডিট রিপোর্ট
ইসি সচিব জানান, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ৩০টি দল নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ১৫টি দল সময় বাড়াতে আবেদন করেছে। ৬টির দলের মধ্যে একটি নিবন্ধন পেয়েছে এ বছর, তাই অডিট রিপোর্ট জমা দেয়নি। এছাড়াও ৫টি দল অডিট রিপোর্ট জমা দেয়নি।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ১৪৫টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। তথ্য ঘাটতি জানিয়ে চিঠি দেওয়ার পর ৩ আগস্টের মধ্যে ৮০টি দল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়েছে। সময় বাড়াতে আবেদন করেছে ৬টি দল। ৫৯টি দল কোনো রিপ্লাই দেয়নি।

তিনি বলেন, সময় বাড়ানো ও তথ্য ঘাটতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়ে কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। ৮৯টি দলের আবেদন ফারদার রিভিউ করছি; ঠিকমতো দিয়েছে কি না, কোনটা মাঠপর্যায়ে যাবে বা আরও তথ্য ঘাটতি থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি জানান, ২ মার্চের চূড়ান্ত তালিকায় ১২ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি ভোটার রয়েছে। ১০ আগস্ট বাদ পড়া সাড়ে ৪৪ লাখের মতো ভোটারের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং মৃত ভোটারদের বাদ দেওয়া হবে। দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি ৩১ আগস্টের মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলে জানান তিনি।

সচিব বলেন, এবার তিনটি তালিকা হচ্ছে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী সবশেষ ভোটের এক মাস আগে সম্পূরক তালিকা প্রকাশ করা হবে, যেখানে নতুন ভোটাররা যুক্ত হবেন।

সচিব বলেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সব মিলিয়ে হালনাগাদ পৌনে ১৩ কোটি ভোটার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সময় রয়েছে বলে জানান ইসি সচিব।

তিনি বলেন, পরবর্তী শুনানি শেষে এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত হবে। আগস্টের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

আখতার আহমেদ জানান, এরই মধ্যে আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। ১০ আগস্টের মধ্যে আবেদনগুলো পেলে বিধি অনুযায়ী শেষ করা হবে।

সচিব জানান, এরই মধ্যে সীমানা আইন সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটার তালিকা সংশোধন অধ্যাদেশ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনী নীতিমালা, স্থানীয় পযবেক্ষক নীতিমালা, বিদেশি পযবেক্ষক ও গণমাধ্যম নীতিমালা, পর্যবেক্ষক সংস্থা নীতিমালা জারি ও আবেদন আহ্বান করা হয়েছে।

আগামী বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সভা রয়েছে। এতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হবে। রাজনৈতিক দল ও আচরণবিধির চূড়ান্ত করা।

তিনি জানান, আরও তিনটি আইন-বিধি সংক্রান্ত তিনটি আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ উইংয়ে ভেটিংয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন, নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান সংশোধন ও ইসি সচিবালয় আইন সংশোধন ভেটিং শেষে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে।

আচরণবিধিতে এআই’র অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কারিগরি ও বিধিতে যুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

>> নির্বাচনী ম্যানুয়াল: আইন-বিধি অনুসরণ করে দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

>> প্রশিক্ষণ: নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একটু একটু করে আগাচ্ছে বলে জানান ইসি সচিব। তিনি জানান, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের যথাসময়ে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা রয়েছে।

নির্বাচনী সরঞ্জাম ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স
ভোটের জন্য সব ধরনের নির্বাচনী সামগ্রী কেনাকাটা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করা হবে বলে জানান সচিব।

তিনি জানান, এরই মধ্যে ৮টি আইটেম দরকার রয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাওয়া যাবে। ইসির হাতে থাকা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার উপযোগী ও যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে।

প্রবাসী ভোট
প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের লক্ষ্যে প্রকল্প অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। এর জন্য বছরে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে।

সচিব জানান, শিগগির পরিকল্পনা কমিশনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়া যাবে। নিবন্ধনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার কাজ চলমান।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের