
তিন মাস দুই দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার রাত ১২টার পর থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার উন্মুক্ত করা হচ্ছে। গত ১ মে থেকে হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, বিকাশ নিশ্চিতে এবং হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের আধিক্য বাড়াতে তিন মাসের জন্য হ্রদের মাছ শিকার ও বিপণনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর হ্রদ কাপ্তাইয়ে কার্প জাতীয় মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বিস্তার ও বিকাশে নিশ্চিতের লক্ষ্যে গত ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্ষন্ত সব ধরনের মাছ শিকার, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। তবে গত ২৮ জুলাই কাপ্তাই লেকে মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত সভায় ৩১ জুলাই পর্ষন্ত মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা মেয়াদ শেষ হলেও হ্রদে মাছ শিকারের সামগ্রিক প্রস্তুতি না থাকায় আরও দুই দিন বাড়িয়ে শনিবার রাত ১২টা পর্ষন্ত বৃদ্ধি করা হয়। হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন ও বিকাশের স্বার্থে প্রতিবছর কাপ্তাই হ্রদে ১ মে থেকে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। হ্রদে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞাকালীন মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২৬ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে।
বিএফডিসি রাঙামাটি বিপণনকেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক মো. মাসুদ আলম জানান, শনিবার রাত ১২টার পর থেকে হ্রদে সকল প্রকার মাছ ধরা, বাজারজাত ও পরিবহনে উন্মুক্ত করা হচ্ছে। এ জন্য বিএফডিসি থেকে সার্বিক প্রস্তুতি হিসেবে সকল অবতরণ ঘাটগুলোতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, হ্রদে মাছ শিকারে উন্মুক্তের ব্যাপারে ১০ থেকে ১৫ দিন আগেই সভার আয়োজন হয়ে থাকে। কিন্তু গত ২৮ জুলাই এ সংক্রান্ত সভা করা হয়েছে। তাছাড়া মাছ ব্যবসায়ীরা মনে করেছিলেন অন্যান্য বারের মতো এবারও হ্রদে মাছে শিকারের নিষেধাজ্ঞা বাড়বে, তাই তাদের প্রস্তুতিও ছিল না। তাই সব মিলিয়ে সামগ্রিক প্রস্তুতির জন্য শনিবার রাত ১২টা পর্ষন্ত হ্রদে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে বিদ্যূৎ উৎপাদনের জন্য রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর ওপর বাঁধ দেওয়া হয়। এ বাঁধের ফলে ৭২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশাল জলধার সৃষ্টি হয়। দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়ার মানব সৃষ্ট সর্ববৃহৎ এ হ্রদের কারণে রাঙামাটি জেলায় ৫৪ হাজার কৃষি জমি পানিতে ডুবে যায়। এ হ্রদের ফলে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট থেকে ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি মৎস্য উৎপাদন করে বিপুল রাজস্ব আয় হচ্ছে। এ হ্রদে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে প্রায় ২৬ হাজার জেলে পরিবার।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম