
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র জনগণের অধিকার। এটা নিয়ে কোনো আপস করব না, এটা আমাদেরকে পেতেই হবে। গণ-অভ্যুত্থানের পর তাৎক্ষণিকভাবে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা। জুলাই ঘোষণাপত্র হঠাৎ হয়ে গেল জুলাই সনদ। আমরা তো কেউ জুলাই সনদ চাইনি। যারা জীবন দিয়েছে আমাদের ঘোষণাপত্র কই?’
শুক্রবার (১ জানুয়ারি) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা ও ভাবগানের আসরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার।
জুলাই ঘোষণাপত্র জনগণের অধিকার মন্তব্য করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর তাৎক্ষণিকভাবে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর জনগণ যে ক্ষমতা পেয়েছিল, তা আবারও ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যেহেতু জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় জুলাই ঘোষণাপত্র হঠাৎ হয়ে গেল জুলাই সনদ। আমরা তো কেউ জুলাই সনদ চাইনি। আমাদের অভিপ্রায় আছে, আমাদের যারা জীবন দিয়েছে, আমাদের ঘোষণাপত্র কই?’
ফরহাদ মজহার বলেন, ক্ষমতার মালিক হবে জনগণ। যদি রাষ্ট্রের কাছে ক্ষমতা রেখে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রাখা হয়, তাহলে রাষ্ট্র আমলাতান্ত্রিকতা দিয়ে চলবে। বিভিন্ন বাহিনীসহ প্রশাসকেরা তখন শাসক হবে, ঠিক যেমন ইংরেজ শাসকেরা আমাদেরকে শাসন করেছে। তাই এই রাষ্ট্রব্যবস্থা চললে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘তথাকথিত জাতীয় ঐকমত্য- এটা হচ্ছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার পরিকল্পনা। জাতীয় ঐক্য ছিল—সেই জাতীয় ঐক্যের নাম গণঐক্য। গণঐক্য ছাড়া গণ-অভ্যুত্থান হয়নি। যদি জনগণ ঐক্যবদ্ধ না থাকত, তাহলে গণ-অভ্যুত্থান সম্ভব ছিল না। এখন যারা জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে, তারা গণঐক্যকে ধ্বংস করতে জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। এখন এটা দিয়ে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। গণঐক্য ছাড়া গণ-অভ্যুত্থান হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান করেছে জনগণ। এর পেছনে কোনো মাস্টারমাইন্ড কিংবা তথাকথিত বিশেষ কোনো গ্রুপের নেতৃত্ব ছিল না। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের দুটি চাওয়া ছিল -ব্যক্তির অধিকার ও ব্যক্তির মর্যাদা নিশ্চিত করা, আর দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করা এবং তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তা বাস্তবায়ন করতে হলে রাষ্ট্রকে সংস্কার নয় বরং নতুনভাবে গঠন করতে হবে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম