
অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ছায়া দেখছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা ছিল, সরকার তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এখনো দেশে মব, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি চলছে। সরকার এভাবে উল্টো যাত্রা চালু রাখলে, জনগণের দ্রোহযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
শনিবার (২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান ভবন মিলনায়তনে ‘অভ্যুত্থানোত্তর বাংলাদেশে কেমন বিশ্ববিদ্যালয় পেলাম?’ শীর্ষক সেমিনারে আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘দেশের মানুষের প্রতি বিভাজন ও বৈষম্য সৃষ্টির কারণে শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী ছিল। তার বিরুদ্ধে দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষ জীবনবাজি রেখে মাঠে নেমে এসেছিল। এমন বিজয় আমরা বহুবার পেয়েছি। কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতার কারণে বারবার বিজয় ধরে রাখা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘কোনো অসংগতি নিয়ে কথা বললেই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়— রাতারাতি সব কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আমরা তা জানি।
তবে আমরা একটি পরিবর্তনের সূচনা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার সব কিছু আগের মতোই চালাচ্ছে। পাহাড় ও সমতলে মানুষ সমানভাবে আক্রান্ত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘চব্বিশের আন্দোলন হয়েছিল কাজের বৈষম্য দূর করতে। অথচ এ সরকারের সময়ে একইভাবে প্রতিবাদী মানুষের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে। মব সন্ত্রাস চলছে। সরকারের কেউ কেউ মব সন্ত্রাসের পক্ষে সাফাই গাইছে।’
আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে শেখ হাসিনার নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি প্রশ্ন রাখেন, মার্কিন স্বার্থ কেন সরকার বাস্তবায়ন করতে চায়।
এই সরকার সব সময় ভারতের আধিপত্যের বিরোধী কথা বললেও বিগত সরকারের সময়ে ভারতের সঙ্গে করা চুক্তিগুলো প্রকাশ করছে না। তাই তাদের ভারতবিরোধী বক্তব্য বাগাড়ম্বর ছাড়া কিছুই নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক বলেন, ‘চব্বিশের শহীদদের স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকে। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। মব সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও পাইকারি মামলা বন্ধ করতে হবে। বিদেশিদের সঙ্গে কোনো ধরনের চুক্তি গোপন করা যাবে না।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা ক্বাফী রতন, সীমা দত্ত ও ড. সামিনা লুৎফাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। শহীদ মিনারে সমাবেশ শেষে দ্রোহযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম