
বাদ পড়া লিচু বিক্রি করেই খুশি তারা
চলছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ। এ সময়টাতে গাছের থোকায় থোকায় ঝুলে থাকে কাঁচাপাকা লিচু। এ সময় এসব লিচু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানোর কাজে ব্যস্ত বাগান মালিক এবং ব্যবসায়ীরা। এদিকে বাগানে বসে লিচু ভাঙার কাজ করছেন নারীরা। আর অন্যদিকে বাগানের ঝড়ে পড়ে যাওয়া কিংবা বাছাইয়ে বাদ পড়া লিচু সংগ্রহ করে আনার পর রাস্তার ধারে পসরা সাজিয়ে বসছে শিশুরা।
দিনাজপুরের সদর উপজেলার মাসিমপুর নামক এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে দু‘ধারে স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা ঝড়ে পড়ে যাওয়া লিচুর পসরা নিয়ে বসেছে। আর কমদামে লিচু পেয়ে গ্রাহকরাও খুশি হয়ে লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এখান থেকে। এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। এ যেন অন্য রকম এক লিচু উৎসব।
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী আফরোজা আকতার একটি টিফিনবাটিতে লিচু নিয়ে বসেছে বিক্রি করার জন্য। লিচু বিক্রি করা টাকা কী করবে জানতে চেলে সে জানায়, ‘পিরান (জামা) চুরি কিনিম, ইস্কুলত যাই মিটাই কাম (স্কুলে কিছু কিনে খাবে)।’
লিচু কিনতে আসা মোসলেম উদ্দিন বলেন, 'নিম্ন আয়ের মানুষরাই এখানকার বেশিরভাগ ক্রেতা। অনেক ভালো ভালো লিচু কম দামে কিনতে পাওয়া যায়। বাগানে কিংবা বাজারে ১০০ বেদানা লিচু বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭০০ টাকা থেকে হাজার টাকায়। এখানে সেই ঝড়ে পড়া ও বাছাইয়ে বাদ পড়া বেদানা লিচু পাওয়া যায় ১৫০-২০০ টাকা।
মো. আলিফ হাসান নামে এক ব্যক্তি বলেন, 'শিশুরা খেলার ছলে লিচু সংগ্রহ করে এবং রাস্তার ধারে বসে বিক্রি করে। প্রতিদিন ৩০০-৫০০ টাকা পায়। এ টাকায় শিশুরা নতুন পোশাক নেওয়ার পাশাপাশি অনেক শিশু তাদের পড়াশোনার জন্য খাতা কলম, প্রাইভেটের বেতন ও স্কুলের বেতন দিতে পারবে। অনেকে আবার মোবাইল ফোন কিনবে। তবে টাকা কি করবে এটা বিষয় নয়, তাদের কাছে এটি একটি উৎসব ও আনন্দের ব্যাপার।'
এস আর