শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪,

৭ বৈশাখ ১৪৩১

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪,

৭ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

১৪ বছর পর জাতীয় পতাকা উড়ল রাজারবাগী পীরের দখলকৃত স্কুলে 

সরওয়ার আজম মানিক, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২ নভেম্বর ২০২১

আপডেট: ০৪:০১, ২ নভেম্বর ২০২১

Google News
১৪ বছর পর জাতীয় পতাকা উড়ল রাজারবাগী পীরের দখলকৃত স্কুলে 

ছবি: রেডিও টুডে

বিতর্কিত রাজারবাগী পীরের আস্তানা উচ্ছেদ করে ঐতিহ্যবাহী ‘ঝাউবন বিদ্যা নিকেতন’-এ ১৪ বছর পর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার সকালে এসময় কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর বড়ছড়া গ্রামে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জাতীয় সংগীতের তালে তালে সুতোয় টান দিয়ে স্থানীয়রা যখন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছিল তখন তাদের প্রত্যেকের চোখ ছিল অশ্রুসিক্ত। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্ররা তাদের স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণের মাধ্যমে দেড়-দুই যুগে আগের ফেলে আসা দিনে ফিরে যায়।

এসময় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। দরিয়ানগর থেকে ১৪ বছর পর রাজারবাগীরা আস্তানা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর রোববার ঝাউবন স্কুলে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড পূননির্মাণ করে গ্রামবাসী। সোমবার সকালে অতিথিদের সাথে নিয়ে জাতীয় সঙ্গীতের তালে তালে সেখানে পতাকা উত্তোলন করা হয়। 

পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক ও গবেষক আহমদ গিয়াস। আরো বক্তব্য রাখেন দরিয়ানগর বড়ছড়া যুবসমাজের সভাপতি মাহবুব আলম, সহ-সভাপতি আবু ফরহাদ বোখারী হিরু, সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা পারভেজ মোশাররফ, স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাক আহমদ, আওয়ামীলীগ নেতা শাহ আলম, কৃষক লীগ নেতা ইমাম হোসেন, শ্রমিক নেতা মো. রুবেল, ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আজিজ প্রমূখ। এসময় এলাকার গণ্যমান্য মুরুব্বী ও বিভিন্ন বয়সের নারী ও শিশুগণ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, রাজারবাগীরা স্থানীয় গ্রামবাসীর কাছে স্কুলের দখল বুঝিয়ে দিয়ে রোববার দুপুরের আগেই তল্পিতল্পা নিয়ে সরে যায় তারা। প্রায় ১৪ বছর আগে এক একর আয়তনের জমিসহ এই ঐতিহ্যবাহী স্কুলটি ও আরো একই পরিমাণ জমিসহ গ্রামের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি জোরপূর্বক জবর দখল করে রাজারবাগ পীর দিল্লুর রহমানের প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড তুলে দেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে গ্রামবাসীর আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকালে জামে মসজিদ থেকে এবং গত রোববার স্কুল থেকে আস্তানা সরিয়ে নেয় রাজারবাগীরা।

এলাকাবাসী জানান, নব্বই এর দশকের শুরুতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৭ সালে উন্নত ও বিনাবেতনে শিক্ষাদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্কুলটি দখল করে নেয় রাজারবাগীরা। এরপর স্কুলটি বন্ধ করে সেখানে কথিত মাদ্রাসার সাইনবোর্ড ঝুলানো হলেও বাস্তবে সেখানে কেউ পড়ালেখার সুযোগ পেত না। জবর দখলমুক্ত হওয়ার পর স্কুলটি একই নামে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামবাসী।

অভিযোগ রয়েছে, এসব আস্তানা থেকে নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে ‘পীরের কেরামতি’ ফলায় রাজারবাগ পীরের বেতনধারী সহযোগীরা। এর শিকার শহরতলীর এই গ্রামের বহু মানুষ। সেইসঙ্গে মসজিদে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো ছিল নৈমিত্তিক বিষয়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিক্ষুব্দ এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে আস্তানা সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজারবাগীরা।  

অনুষ্ঠানে জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল, সহ-সভাপতি হুমায়ূন কবীর হিমু, কক্সবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়েস এর প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন, কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি এইচএম নজরুল, টেরিটোরিয়াল নিউজ এর চিফ রিপোর্টার আজিম নিহাদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের