
শুধু পথ চেনা কিংবা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালনা নয়, চীনের সমুদ্রে জেলেদের জীবনেও বিরাট পরিবর্তন এনেছে বেইতৌ। সমুদ্রের আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতির পূর্বাভাস তো আছেই, সেই সঙ্গে প্রতিটি মাছ ধরার নৌকায় তাৎক্ষণিক নজর রাখতে পারছে এই সিস্টেম। এতে চীনের জেলেরা এখন মাছ ধরতে পারছেন আরও নিশ্চিন্তে।
বেইতৌ এখন টাইফুনের গতিবিধি ও নৌযানের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত করছে জেলেদের নিরাপত্তা।
আবার বন্দরের কার্যক্রমে গতি আনতেও ভূমিকা রাখছে বেইতৌ নেভিগেশন সিস্টেম। চীনের কুয়াংচৌ বন্দরের নানশা ফেজ-৪ টার্মিনালে এখন আর হাতে ক্রেন চালাতে হয় না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত ক্রেনে পণ্য খালাস হচ্ছে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই। আর এই নতুন টার্মিনালে ব্যবহার করা হচ্ছে বেইতৌ স্যাটেলাইট।
চীন এখন বেইতৌ-৪ তৈরির পরিকল্পনা করেছে। এটি হবে আরও উন্নত, স্মার্ট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযুক্ত। ২০৩৫ সালের মধ্যে বেইতৌকে একটি ‘স্মার্ট নেভিগেশন’ সিস্টেমে রূপান্তরের লক্ষ্য রয়েছে, যা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, ড্রোন ও রোবোটিক্সে ঘটাবে প্রযুক্তিগত বিপ্লব।
উচ্চমানের পরিষেবা দেওয়ার উপযোগী এই নেভিগেশন সিস্টেমসহ তিনটি পরীক্ষামূলক স্যাটেলাইট ২০২৭ সালের দিকে উৎক্ষেপণের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। এর নেটওয়ার্ক স্থাপনা শুরু হবে ২০২৯ সালে এবং ২০৩৫ সালে কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চায়না স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন অফিস জানিয়েছে, পরবর্তী প্রজন্মের বেইতৌ সিস্টেম মিটার থেকে ডেসিমিটার পর্যন্ত নির্ভুল তথ্য এবং রিয়েলটাইম নেভিগেশন, পজিশনিং এবং টাইমিং সেবা প্রদান করবে, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে কক্ষপথের নিকটবর্তী অঞ্চলও কভার করবে।
আগামী দিনে বিশ্ব যখন ৬জি, আইওটি এবং স্বয়ংক্রিয় যানবাহনের দিকে এগোবে, বেইতৌ হয়ে উঠবে সেই ভবিষ্যতের অন্যতম স্তম্ভ। চীনের তৈরি এই স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম শুধু একটি প্রযুক্তিই নয়, এটি এক যুগান্তকারী অর্জন, যা বিশ্বকে দেখিয়েছে কীভাবে স্বনির্ভরতা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়ে তোলা যায় নিজস্ব নেভিগেশন ব্যবস্থা।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম