
চীনা জনগণের জাপানি আগ্রাসনবিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী স্মরণে বুধবার বিজয় দিবসের সমাপ্তিতে রাজধানী বেইজিংয়ের থিয়ানআনমেন স্কোয়ারের আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয় ৮০ হাজার ঘুঘু। ৮০ হাজার বেলুনও উড়েছে সেইসঙ্গে।
এ সময় উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান প্রেসিডেন্ট শিচিনপিং। স্কোয়ারজুড়ে দেশপ্রেমের গান ‘ওড টু দ্য মাদারল্যান্ড’ ধ্বনিত হয়।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও চীনের জাপানবিরোধী সংগ্রামে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই কুচকাওয়াজে অংশ নেয় সেনাবাহিনীর নানা বাহিনী ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র
এ দিন চীনা জনগণের জাপানি আগ্রাসনবিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী স্মরণে, বেইজিংয়ের থিয়ানআনমেন মহাচত্বরে, একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। বুধবার সকালে কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে, বিমান, যুদ্ধবিমান, বোমারু বিমান, এবং সামরিক পরিবহন বিমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি আকাশযান দল, থিয়ানআনমেন মহাচত্বরের ওপর দিয়ে উড়ে যায়।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিএমজির একাধিক খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।
কুচকাওয়াজের নানা প্রদর্শনীতে দেখানো হয় চীনের স্থলযুদ্ধের সক্ষমতা, আকাশ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, লজিস্টিক সাপোর্ট, আনম্যানড কমব্যাট, নৌ-যুদ্ধ ও তথ্য-যুদ্ধের সক্ষমতাসহ সামগ্রিক সামরিক উদ্ভাবন। এ ছাড়া কুচকাওয়াজে স্থল, সমুদ্র ও আকাশভিত্তিক কৌশলগত পারমাণবিক শক্তি তথা নিউক্লিয়ার ট্রায়াড প্রথমবারের মতো উন্মোচন করেছে চীন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শিচিনপিং এবং চীনের কুচকাওয়াজ দেখতে আসা আন্তর্জাতিক অতিথিরা বুধবার সকালে বেইজিংয়ের থিয়েনআনমেন রোস্ট্রামে এক বিশাল সমাবেশে যোগ দেন।
৮০ বছর আগে, চীনা জনগণ, বিশ্ববাসী সাথে, একটি কঠিন ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, ফ্যাসিবাদকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করেছিল এবং একটি কষ্টার্জিত শান্তি অর্জন করেছিল। বেইজিংয়ে আয়োজিত মহাসমাবেশে শি বলেন, চীনের এই প্রতিরোধযুদ্ধ ছিল আধুনিক ইতিহাসে বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ জয়। চীনা জনগণ বিপুল ত্যাগ স্বীকার করে মানবসভ্যতার রক্ষায় ও বিশ্বশান্তির পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, কেবল তখনই যুদ্ধের মূল কারণ দূর হবে এবং অতীতের ট্র্যাজেডি পুনরাবৃত্তি ঠেকানো যাবে, যখন বিশ্ব জাতিগুলো পরস্পরকে সমানভাবে সম্মান করবে, শান্তিতে সহাবস্থান করবে এবং পারস্পরিক সমর্থন দেবে।
শি চিনপিং বলেন, আজ মানবজাতি আবারও শান্তি নাকি যুদ্ধ, সংলাপ নাকি মুখোমুখি সংঘাত, জয়-জয় সহযোগিতা নাকি শূন্য-শূন্য ফলাফলের মধ্যে কোনটা বেছে নেবে, সেই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে।
তিনি অঙ্গীকার করেন, চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে থেকে মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যতের সম্প্রদায় গড়ে তুলতে বিশ্ববাসীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাবে। সব জাতিগোষ্ঠীর চীনা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে শি বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আধুনিকায়নের পথে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়া হবে।
এ ছাড়া, তিনি পিপলস লিবারেশন আর্মিকে বিশ্বমানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এবং বিশ্বশান্তি ও উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন। বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য এক বিশাল সমাবেশের আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শিচিনপিং এবং বিদেশি রাষ্ট্রনেতারা থিয়েনআনমেন রোস্ট্রামে হেঁটে যান।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম