কানের ভেতরে ভোঁ ভোঁ বা শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা। অনেক সময় গোসলের সময় পানি ঢোকা, কানের সমস্যা বা শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার কারণেও এমন শব্দ হতে পারে। আবার অনেক সময় শ্রবণশক্তি স্বাভাবিক থাকলেও বিভিন্ন কারণে কানে শব্দ অনুভূত হয়।
নাক, কান ও গলারোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের শ্রবণশক্তি কম, তাদের অনেকেরই কানে শব্দ হয়।
তাই প্রথমে শ্রবণশক্তি পরীক্ষার মাধ্যমে জানা জরুরি কেন কম শোনা হচ্ছে। কারণ পরিষ্কার হওয়া সত্ত্বেও যদি রোগী ঠিকমতো না শুনতে পান, তবে প্রয়োজন হতে পারে হিয়ারিং এইড ব্যবহারের।
কানে ভোঁ-ভোঁ শব্দ হলে করণীয়
অতিরিক্ত গুরুত্ব দেবেন না : শরীরের অনেক সংকেত মস্তিষ্কে আসে, কিন্তু প্রয়োজনে মস্তিষ্কই সেগুলোকে গুরুত্ব দেয়। সবসময় কানের শব্দের দিকে মনোযোগ দিলে বিরক্তি বাড়ে।
উপেক্ষা করলে শব্দ থাকলেও অসুবিধা কমবে।
পরিবেশে অন্য শব্দ রাখুন : গান, সুর বা ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড থাকলে কানের শব্দ কম মনে হবে।
নিজেকে ব্যস্ত রাখুন : কাজকর্মে মনোযোগী থাকলে এসব শব্দ সাধারণত কম বিরক্তি সৃষ্টি করে।
ভয় পাবেন না : সঠিক পরীক্ষা–নিরীক্ষায় যদি জানা যায় যে কোনো জটিল সমস্যা নেই, তাহলে স্বাভাবিক থাকুন।
ভয় বা দুশ্চিন্তা সমস্যা আরো বাড়াতে পারে।
প্রয়োজনে চিকিৎসা : অনেক সময় চিকিৎসক ওষুধ বা টিনিটাস মাস্কার নামক যন্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন।
মানসিক নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ : সবকিছু যন্ত্র বা ওষুধের ওপর নির্ভর না করে মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। যদি পরীক্ষায় দেখা যায় কান, স্নায়ু বা মস্তিষ্কে কোনো গুরুতর সমস্যা নেই—তাহলে নিজের ইচ্ছে শক্তিই হতে পারে সবচেয়ে বড় সমাধান।
কান থেকে মাথা ঘোরা কেন হয়
অন্তঃকর্ণের ভেস্টিবুল ও সেমি–সার্কুলার ক্যানাল শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে।
নাক, কান ও গলার বিভিন্ন সমস্যায় এই ভারসাম্য ব্যবস্থায় গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে মাথা ঘোরানো হতে পারে।
সাধারণ কারণ
কানে ময়লা জমা
বহিঃকর্ণ বা মধ্যকর্ণে সংক্রমণ
কানের পর্দা ছিদ্র হওয়া
ঘনঘন কান পাকা
কানে পানি জমা
কোলেস্টিয়াটোমা
নাক ও ইউস্টেশিয়ান টিউবের সমস্যা
সাইনাসের দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ
নাকের হাড় বাঁকা থাকা
অনেক সময় অন্তঃকর্ণে ভাইরাল সংক্রমণ থেকেও মাথা ঘোরায়। এর কারণ হতে পারে—
কমন কোল্ড
প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা
চিকেন পক্স
মিজলস
জটিল কারণ
অটোস্ক্লেরোসিস : কানের ভেতর হাড় শক্ত হয়ে যাওয়া।
মেনিয়ার্স ডিজিজ : অন্তঃকর্ণের চাপ বেড়ে যাওয়া।
কান বা নাকের পেছনে টিউমার বা ক্যান্সার।
মাথা ঘোরালে কী করবেন
তীব্র মাথা ঘোরার সময় একা চলাফেরা করবেন না।
বিশ্রামে থাকুন এবং কঠোর কাজ এড়িয়ে চলুন।
বারবার বমি হলে পানির ঘাটতি ও পুষ্টির অভাব যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্টিমিটিল বা সিনারন জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।
তবুও সমস্যা না কমলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

