
বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও, আয় বাড়েনি গরিব মানুষের। ফলে তাদের মধ্যে না খেয়ে থাকার প্রবণতা বেড়েছে। সারাদেশে ১৬শ নিম্নআয়ের পরিবারের ওপর জরিপ চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং-সানেম।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে কেমন আছেন গরিব মানুষ? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে শহরের বস্তি ও গ্রামের ১৬শ পরিবারের কাছে যায় গবেষণা সংস্থা সানেম। নেওয়া হয় গত ছয় মাসের আয়-ব্যয়, খাবারের তথ্য।
বুধবার ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরে সানেম। জরিপটি চলতি মার্চ মাসে করা হয়েছে। তবে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি—এই ছয় মাসের তথ্য নেওয়া হয়েছে
সংস্থাটি জানায়, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন গরিবের সংখ্যা বেড়েছে। এ অবস্থায় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানোর সুপারিশ সংস্থাটির।
সানেম আরও জানায়, আলোচ্য সময়ে গরিব মানুষের আয় বাড়েনি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে গড় আয় ছিল প্রায় ১৪ হাজার টাকা। গত ফেব্রুয়ারিতে যা একই ছিল। তবে এই সময়ে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। পৌনে ১২ হাজার টাকা থেকে খরচ বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার। এই বাড়তি খরচ সামাল দিতে আগের তুলনায় অনেকেই খাওয়া কমিয়েছেন, অনেকে ভাঙেন সঞ্চয়, করেন ধার-দেনা।
সানেমের হিসাবে, খাবারের অভ্যাস বদলেছে ৯০ ভাগ গরিবের। একবেলা না খেয়ে থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে ৩৭ শতাংশের। ক্ষুধা আছে কিন্তু খাবার পাননি ৩২ শতাংশ মানুষ। আর সারাদিনই না খেয়ে থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে ১৮ ভাগের। ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন গবির মানুষের সংখ্যাও বেড়ে ২৫ শতাংশ হয়েছে।
সানেম দেখতে পায়, জরিপে অংশ নেওয়া পরিবারের ৪০ শতাংশ সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা পেয়েছে। গবেষকরা বলছেন, সরকার গরীব মানুষের সহযোগিতা না বাড়ালে,তাদের দেনা আরও বাড়বে। অনেকে ভিক্ষা শুরু করবেন। অনেকে আবার ছেলে মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ করে কাজে পাঠাবেন।
সানেমের গবেষণা বলছে, ১৮ শতাংশ গরিব আগামী ছয় মাসে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার আশায় আছেন।
রেডিওটুডে নিউজ/মুনিয়া