বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

জুলাই সনদের সার্থকতা নির্ভর করে বাস্তবায়নের ওপর: বদিউল আলম

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ২৭ আগস্ট ২০২৫

Google News
জুলাই সনদের সার্থকতা নির্ভর করে বাস্তবায়নের ওপর: বদিউল আলম

সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে রাজনৈতিক দলগুলোকে এর পরিণাম ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, জুলাই সনদের সার্থকতা নির্ভর করে বাস্তবায়নের ওপর। নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) দিয়ে এবং পরবর্তী সংসদে সংস্কার করা হবে– এ মনোভাব প্রকাশ করে রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘প্রস্তাবিত জুলাই সনদ ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি। সংলাপের আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। 

এতে সভাপতিত্ব করেন সুজনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিচারপতি এমএ মতিন। বক্তৃতা করেন সাবেক মহা হিসাবনিরীক্ষক ও অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, বিআইজিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মির্জা হাসান, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ মোহাম্মদ সাহান প্রমুখ। 

ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের খসড়া করেছে। এতে দুই দফার সংলাপে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের মতামতে ৮৪টি সংস্কারের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। ভোটের অনুপাতে (পিআর) উচ্চকক্ষ গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠনসহ ৯টি সিদ্ধান্তে বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। খসড়ায় সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য এবং আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ রহিতের অঙ্গীকার করা হয়েছে। জামায়াত, এনসিপিসহ বেশি সংখ্যক দল এতে একমত হলেও বিএনপি রাজি নয়। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সংস্কারের পক্ষে জনমত রয়েছে।

সুজন প্রস্তাবিত জাতীয় সনদ চূড়ান্তকরণে জনমত যাচাইয়ে ১ হাজার ৩৭৩ জন উত্তরদাতার ৬৯ শতাংশ দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে মত দিয়েছে। ৭১ শতাংশ উত্তরদাতা পিআর পদ্ধতির উচ্চকক্ষ চান। ৮৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর দলীয় প্রধান পদে থাকা উচিত নয়। ৮৯ শতাংশ চান, কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না। ৮৩ শতাংশ উত্তরদাতা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান। আগের নির্বাচনগুলোর অনিয়মের তদন্ত চান ৭৯ শতাংশ উত্তরদাতা। বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের বেঞ্চ চান ৮৮ শতাংশ উত্তরদাতা। 

আইন প্রণয়নেও প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের ভূমিকা চান মুসলিম চৌধুরী। তিনি বলেন, গণভোটই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য উপায়। এ ছাড়া ফরমানের মাধ্যমে পরবর্তী সংসদে সনদ পাস অনুমোদন করা যেতে পারে। 

নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়নি– এ সমালোচনার জবাবে মনির হায়দার বলেন, দিনের পর দিন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও ঐকমত্য কমিশন সংলাপে পাঁচবার নারী প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাব তুলেছে। দলগুলো একমত না হওয়ায় ১০০ আসনে নারীদের মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। এখন অনেকেই কমিশনকে দোষারোপ করছেন। কিন্তু দাবি আদায়ে নারী নেত্রীদের রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ঘেরাও করতে দেখিনি। ঐকমত্য কমিশন ছয় মাসে যা অর্জন করেছে, তাতে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। অন্যান্য দেশে এটুকু অর্জনে গড়ে আড়াই বছর লেগেছে। 

ড. আসিফ মোহাম্মদ সাহান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে যে পরিমাণ নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে, তাতে মনে হয় না কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গেলে তা বাস্তবায়ন করবে। তাই ভবিষ্যতে স্বৈরাচারের উত্থানের সুযোগ কমাতে পারবে না সনদ। এত নোট অব ডিসেন্টসহ জুলাই সনদ কীভাবে গণভোটে দেওয়া হবে– তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়।  দলগুলো যদি নোট অব ডিসেন্টে ছাড় না দেয়, তাহলে সনদটি অর্থবহ পরিবর্তন আনবে না। 

ড. মির্জা হাসান বলেন, এত নোট অব ডিসেন্ট হতাশাজনক। এত সংস্কার একসঙ্গে গণভোটে দেওয়াও জটিল। 

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের