বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

জিআই স্বীকৃতি পেল ফুলবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী লাল চিনি

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:০১, ২৭ আগস্ট ২০২৫

Google News
জিআই স্বীকৃতি পেল ফুলবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী লাল চিনি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় আখের রস থেকে হাতে তৈরি লাল চিনির ঐতিহ্য প্রায় ২৫০ বছরের। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী এই চিনি ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। মঙ্গলবার ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ওয়েবসাইট চেক করে গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। ২০২৪ সালের ১১ জুলাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ফুলবাড়িয়ার লাল চিনির জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়। অন্য কোনো পক্ষের দাবি না থাকায় সব প্রক্রিয়া শেষে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। সনদের জন্য সরকার-নির্ধারিত ফি জমা দেওয়া হয়েছে।’

নূর মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘লাল চিনি সরাসরি আখ থেকে তৈরি অপরিশোধিত চিনি। এতে আখের সব উপাদান থাকে। তাই লাল চিনি স্বাস্থ্যকর। জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় লাল চিনি দেশের বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে যাবে। এর মাধ্যমে অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসবে। আগে যারা লাল চিনি সম্পর্কে জানতেন না, তারাও এখন জানবেন। কৃষকেরা উৎপাদন বাড়াবেন, সেই সঙ্গে সরকারেরও পৃষ্ঠপোষকতা বাড়বে। অর্গানিক পণ্য হিসেবে লাল চিনি যদি দেশের বাইরে রপ্তানি করা যায়, তাহলে চাষিদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে।’

ফুলবাড়িয়ায় বংশ পরম্পরায় টিকে আছে হাতে তৈরি লাল চিনি। উপজেলার বাক্তা, কালাদহ, এনায়েতপুর এবং রঘুনাথপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের কৃষকেরা আখ উৎপাদন ও লাল চিনি তৈরির কাজ করেন। এ উপজেলায় প্রতিবছর শতকোটি টাকার লাল চিনি বিক্রি হয়। মিহিদানার এই চিনি দিয়ে শরবত, মুড়ির মোয়া, পিঠা, পায়েশ, চিড়ার লাড়ু, খিরসহ বাহারি মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করা হয়।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, লাল চিনি তৈরির একমাত্র কাঁচামাল আখ। জমি থেকে আখ কেটে সংগ্রহের পর তা পরিষ্কার করে যন্ত্রচালিত কলের সাহায্যে রস বের করা হয়। প্রথমে চুলায় কড়াই বসিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাঁচা রস জ্বাল দেওয়া হয়। রস ঘন হলে কাঠের মুগুর দিয়ে বারবার নাড়া দিয়ে তৈরি হয় অদানা বাদামি রঙের লাল চিনি। শুকনো ধুলার মতো বা গুটির মতো, দুই রকম আকারে তৈরি হয় এটি। পরে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। কৃষকরা বলছেন, জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় চিনির চাহিদা আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে তাদের ব্যবসার বিস্তার ঘটবে।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর ইসলাম বলেন, লাল চিনির জিআই স্বীকৃতিতে প্রশাসনসহ এলাকার সব শ্রেণির মানুষ খুব খুশি। এই স্বীকৃতি কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের