
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’ এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
এই ক্ষমতার মেয়াদ ১২ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ৬০ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং তারা সারাদেশে এ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।
এর আগে গত ১৪ জুলাই থেকে দুই মাসের জন্য একই আদেশ জারি করা হয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হয় আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর)।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধির, ১৮৯৮’ এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসার (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এ ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয় বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চরম আকার ধারণ করলে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই দেশে কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে সরকার। আন্দোলন ঘিরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার ব্যাপক সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বহু পুলিশ সদস্যও প্রাণ হারান। আগুনে পুড়ে যায় বিভিন্ন থানা, লুট হয় অস্ত্র।
পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নেয় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর, যখন সারাদেশের পুলিশ থানা ছেড়ে কর্মবিরতিতে চলে যায়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে।
এই প্রেক্ষাপটেই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর ফলে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম