বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ওপরতলার কিছু শিক্ষিত লোক যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে ঘাড়ের ওপর গণভোট ও সনদের মতো বিষয় চাপিয়ে দিচ্ছে।’ রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কয়েকটা দল বলছে, নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। আমরা বলছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে।’
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘আপনারা কি গণভোট, সনদ এসব বোঝেন? এসব বোঝেন শিক্ষিত কিছু ওপরতলার লোক, যারা আমেরিকা থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। আমরা সংস্কার ও গণতন্ত্রের পক্ষে, কিন্তু যা মেনে নেব না, তা সংসদে আলোচনার মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে।’
বর্তমান রাজনৈতিক সংকটকে ‘নাটক’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত ১৫ বছর আমরা ভোট দিতে পারিনি। ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করেছিলাম, ২০১৮ সালে আগের রাতে ভোট নিয়ে গেছে। এবার আমরা সবাই ভোট দিতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ খুব ভালোভাবেই বুঝে গেছে কী ঘটছে। এখন সবাই শুধু ভোট দিতে চায়—এটাই তাদের প্রধান দাবি।’
গণ–অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। নিজের কর্মী ও সমর্থকদের অসহায় অবস্থায় ফেলে গেছেন। এতে বোঝা যায়, তাঁর জনগণের প্রতি কোনো দরদ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের এই মাটিতেই জন্ম, এখানেই মরব—কিন্তু দেশের মাটি ছেড়ে কখনো যাব না।’
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ধানের দাম নেই, আলুতেও ক্ষতি হচ্ছে। কৃষক এখন লাভবান হতে পারছে না। বিএনপি ক্ষমতায় এলে কৃষক যেন তার ফসলের ন্যায্যমূল্য পান, সেই ব্যবস্থা করবে।’
বর্তমান সরকারকে ‘জনবিচ্ছিন্ন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার ভোট করে আসেনি, তাই মানুষের কষ্ট বোঝে না। কৃষকের সমস্যা কোথায়, তা নিয়েও তাদের কোনো আগ্রহ নেই।’
নিজের শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার বয়স অনেক হয়েছে। জানি না কতদিন বাঁচব। এই আসন থেকেই আমি নির্বাচনে অংশ নিই—কখনো হেরেছি, কখনো জিতেছি, কিন্তু জনগণকে ছেড়ে যাইনি। এবার বলছি, এটা আমার জীবনের শেষ নির্বাচন।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

