সময় নষ্ট না করে নেতাকর্মীদের মাঠে নামার আহ্বান তারেক রহমানের

মঙ্গলবার,

০৯ ডিসেম্বর ২০২৫,

২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

মঙ্গলবার,

০৯ ডিসেম্বর ২০২৫,

২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

Radio Today News

সময় নষ্ট না করে নেতাকর্মীদের মাঠে নামার আহ্বান তারেক রহমানের

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ২১:৪০, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

Google News
সময় নষ্ট না করে নেতাকর্মীদের মাঠে নামার আহ্বান তারেক রহমানের

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ‘আর বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে মাঠে’ নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের আর ঘরে বসে থাকার বিন্দুমাত্র সময় নেই। মাঠে চলে যেতে হবে, মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, পথে-প্রান্তরে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ‘পারবেন কিনা’ জানতে চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘তোমাদের পারতে হবে।

এর বাইরে আর এখন সময় নেই। আসুন এটাই হোক আজকে আমাদের প্রতিজ্ঞা, এটাই হোক আজকে আমাদের এই দেশগড়ার পরিকল্পনার শপথ। পরিকল্পনা করেছি। এখন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাস্তবায়নের জন্য এখন মাঠে নেমে পড়তে হবে।’
আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির আয়োজনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন তারেক রহমান।

‘কথার ফুলঝুরিতে মানুষের পেটে খাবার আসবে না’

অতীতে বিএনপি সরকারে থাকাকালে বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনা ও তার সফল বাস্তবায়নের ‘ট্র্যাক রেকর্ড’ তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘কথার ফুলঝুরি দিয়ে জনগণের পেটে খাবার আসে না, কথার ফুলঝুরি দিয়ে কর্মসংস্থান হয় না; কথার ফুলঝুরি দিয়ে জনগণের অর্থের সংস্থান হয় না, কর্মসংস্থান হয় না।

‘কর্মসংস্থান করতে হলে পরিকল্পনা লাগে, জনগণের পেটে আহার দিতে হলে, ভাত দিতে হলে পরিকল্পনা লাগে; যা একমাত্র আপনার আছে, যা একমাত্র এই দলের আছে।

যা একমাত্র বিএনপির আছে আর কারো নেই।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তির বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রত্যেকটি নেতাকর্মী একটি জিনিস মনে রাখবেন, আজ দেশের স্বাধীনতা বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব বলেন, গণতন্ত্র বলেন, সবকিছু নির্ভর করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ওপরে। আমরা যদি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি, এই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। এই দেশকে আমরা ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে পারব, এই দেশের অর্থনীতি, এই দেশের নারী স্বাধীনতা থেকে শুরু করে, এই দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে সকল কিছু ধীরে ধীরে আমরা নিশ্চিত করতে পারব।

‘যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে দেশকে না পারি, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারি, জনগণকে জনগণকে সঙ্গে রাখতে না পারি, এই দেশের অস্তিত্ব নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন দেখা দেবে।

দলের নেতাকর্মীদের বিএনপি প্রণীত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ সারা দেশে ঘরে ঘরে ‘মা-বোনদের কাছে, তরুণ প্রজন্মের কাছে, মুরব্বীদের কাছে, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কাছে অবশ্যই পৌঁছাতে হবে’ বলে নির্দেশনা দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘হ্যাঁ, এগুলো পৌঁছাতে হবে। ইয়েস আমাদের কাছে কোনো জাদু নেই.. এটা জনগণ জানে।

‘জনগণ দেখতে চায় বিএনপি করছে কি না, করবে কি না। বিএনপি ইনশা আল্লাহ যদি আমরা ৪০% করতে পারি সেটি, জনগণ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে।’

‘দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন করা হবে’

তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা জানেন, আজকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস। বিএনপির ট্র্যাক রেকর্ড আছে, আমরা দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরেছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি গঠন করা হয়েছিল। আপনারা সকলে না জানলেও কেউ কেউ অবশ্যই জানেন, সেই দুর্নীতি দমন কমিশনকে এতটাই ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল যে, সেই কমিশন যদি সরকারের কোনো একটি বিষয়ে তদন্ত করতে চাইতো, সরকারের কোনো পারমিশনেরই প্রয়োজন ছিল না, তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিল। বেগম খালেদা জিয়া কতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, কতটা দৃঢ় শপথ ছিল তার দুর্নীতিকে দমন করার জন্য যে, উনি ওই কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করে দিয়েছিলেন।

‘ইনশা আল্লাহ এটি আমরা আবার করবো। গত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার এই নিয়মটি পাল্টে দিয়েছিল যে, সরকারের কোনো কিছু দুর্নীতি তদন্ত করতে হলে সরকারের পারমিশন লাগবে। আমরা দরকার হলে দেশের স্বার্থে প্রয়োজন হয়, এটিকে আমরা আবার চেঞ্জ করে দেব।’

‘বিএনপি আগামীতে সরকার গঠনে সক্ষম হবে’

তারেক রহমান বলেন, ‘যদি সত্যিই দেশকে আপনি ভালোবেসে থাকেন, আমরা যদি সত্যিই দেশকে ভালোবেসে থাকি; এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, এই দেশের মানুষের রাজনৈতিক ভোটের অধিকার, বাক স্বাধীনতার জন্য, আমাদের হাজারো হাজারো মানুষ নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে, লাখ লাখ নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছে।

‘আসুন আমরা সকলে মিলে যদি সরকারকে সহযোগিতা করি যে সরকার নির্বাচিত হবে এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে চাই, ইনশা আল্লাহ জনগণের রায় বিএনপি সরকার গঠন করতে করতে সক্ষম হবে। সেই সরকারকে সফল করতে হলে আপনাদের প্রত্যেকের সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে সহযোগিতা করতে হবে। যে অন্যায়, যে করে সে কোনো দলের হতে পারে না। অন্যায় যে করে, সে অন্যায়কারী। যেকোনো মূল্যে আমাদের এনসিউর করতে হবে যে, কঠোর হস্তে আমরা দেশের স্বার্থে দেশের মানুষের স্বার্থে, আমাদের যেকোনো মূল্যে দুর্নীতির লাগাম টেনে রাখতে হবে এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলাকে আমাদের ঠিক রাখতে হবে।’

তালপট্টি দ্বীপ প্রসঙ্গে

তারেক রহমান বলেন, ‘তালপট্টির কথা আপনাদের মনে আছে? শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তালপট্টির ওপরে কীভাবে বিএনপি নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছিল, এটি ছিল আমাদের দেশের অংশ।

‘ঠিক একইভাবে নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে, কীভাবে আমাদের পানির হিস্যাকে আমরা বের করে নিয়ে এসেছিলাম এবং তার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পর্যন্ত যেতে কোনোরকম দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম না। আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পর্যন্ত গিয়ে বলেছি যে, আমাদের পানির হিস্যা আমাদের দিতে হবে এবং সেটি আমরা আল্লাহর রহমতে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা বা সার্বভৌমত্ব বলেন, বিএনপির কাছে নিরাপদ। দেশের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা বলেন; এটিও বিএনপির ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করতে বিএনপির ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আইনশৃঙ্খলা কঠোর, ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবস্থা চাল, প্রান্তিক মানুষ থেকে শুরু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড পর্যায়ক্রমে প্রদান, কৃষকদের জন্য ফার্ম কার্ড, সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য কার্ড, ভোকেশনাল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনাগুলোর কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান।

‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের