বৃহস্পতিবার,

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

৯ আশ্বিন ১৪৩২

বৃহস্পতিবার,

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

৯ আশ্বিন ১৪৩২

Radio Today News

শ্রেণিকক্ষে ঢুকে অর্ধশত শিক্ষার্থী পেটালেন এক ছাত্রনেতা

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Google News
শ্রেণিকক্ষে ঢুকে অর্ধশত শিক্ষার্থী পেটালেন এক ছাত্রনেতা

রংপুরে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ‘অকৃতকার্য’ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়ের  এডহক কমিটির সভাপতিও।

গত চার সেপ্টেম্বর দুপুরে নগরীর হারাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি প্রথমে স্কুল কর্তৃপক্ষ চেপে গেলেও পরে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ক্রোধের মুখে তা ছড়িয়ে পড়ে। থানায় হয়েছে জিডিও।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ইমতিয়াজ ইমতি। তিনি বাগছাসের রংপুর মহানগরের আহবায়ক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নগর আহবায়ক। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করছেন।

নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা জানান, ওই দিন দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢোকেন ইমতিয়াজ আহমেদ। এসময় অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে তাদের বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করেন। তখন উপস্থিত শিক্ষকরা কেউ বাধা দেননি।

এক শিক্ষার্থী বলেন, দুই বিষয়ে ফেল করেছি বলায় তিনি আমাকে তিন বার আঘাত করেন। দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাকে একেবারে গণপিটুনি দিয়েছে। এক নারী শিক্ষার্থী জানান, আমাকে দুই হাতে মেরেছে, বান্ধবীদেরও মেরেছে। এমনকি এসময় যারা অনুপস্থিত ছিলো তাদের নাম লিখে নিয়েছে।

ইয়াকুব আলী নামে এক অভিভাবক বলেন, নির্যাতনের ফলে আমার ভাতিজির হাত ফুলে গেছে। পরে ওষুধ খাইয়ে দিতে হয়েছে। রফিকুল ইসলাম আরেক অভিভাবকের অভিযোগ, আমরা প্রতিবাদ করলে ইমতি প্রথমে ক্ষমা চায়, পরে পুলিশ নিয়ে আসে। এরপর আমাদের হুমকিও দিয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় দুই দিন পর এলাকাবাসী স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জবাব চান। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দুই বড় ভাই পরশুরাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

কিন্তু এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি। তার ভাষ্য, ‘শিক্ষার্থীদের একটু শাসন করেছি মাত্র। ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর কোনো অভিযোগ নেই। কিছু ব্যক্তি বিষয়টি অতিরঞ্জিত করছে।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান জানান, ইমতি শুধু শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়েছেন। অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।

এদিকে প্রধান শিক্ষকের বয়ান ‘শিক্ষার্থীদের উৎসাহ’, ইমিতর ভাষ্য, ‘একটু শাসন মাত্র’ বলা হলেও দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে নির্যাতনের বর্ণনা ও নির্যাতনের সচিত্র প্রতিবেদন দেখা গেছে। অতিসংবেদনশীল হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নাম ও নির্যাতনের চিত্র এই প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়নি। তবে এসবের বিস্তারিত তথ্য একাত্তরের হাতে এসেছে।

দৈনিক প্রথম আলো হারাটির স্থানীয় বাসিন্দা ও মহানগর বিএনপির চার নম্বর ওয়ার্ডের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলামের বরাতে জানিয়েছে, ‘এটা কোনোভাবেই ‘শাসন’ নয়, শিক্ষার্থী নির্যাতন; একই সঙ্গে ফৌজদারি অপরাধ। প্রধান শিক্ষকের উচিত ছিল বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তিনি তা না করে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছেন।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হাই জানান, স্কুলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই ঘটনা তাকে জানানো হয়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের