
রুকাইয়া জাহান চমক
দিন কয়েক আগে সহশিল্পী আরশ খানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। তার দাবি ছিল, 'এই অভিনেতা তার কাছে বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু চেয়েছেন। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।'
এরপরই সমস্যার সূত্রপাত হয় গত ৪ আগস্ট। আদিব হাসান পরিচালিত ‘শ্বশুরবাড়িতে প্রথম দিন’ শিরোনামের নাটকের সেটে চমকের দেরি করে উপস্থিত নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। তিনি নাকি শুটিংয়ের সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেছেন। এমনকি সিনিয়র শিল্পীকেও ছেড়ে কথা বলেননি। এমনকি সেটে তিনি পুলিশও নিয়ে আসেন।
এরপর ডিরেক্টরস গিল্ডের কাছে অভিযোগ করেন নাটকের নির্মাতা আদিব হাসান। অন্যদিকে চমকও অভিনয় শিল্পী সংঘের কাছে অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামিয়েছে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব), ডিরেক্টরস গিল্ড ও অভিনয় শিল্পী সংঘের নেতারা। সংগঠন তিনটি রোববার (১৩ আগস্ট) বিকালে সমস্যার সমাধানে বসে। এ সময় অভিযোগকারী চমক ও নির্মাতা আদিব হাসানের অভিযোগ শোনা হয়। সেই সঙ্গে সাক্ষী হিসেবে অভিনেতা আরশ খানের বক্তব্যও শোনেন সংগঠনের নেতারা।
সভাশেষে অভিনয়শিল্পী সংঘ এক বার্তায় সভার সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে পাঠায়। সেখানে অভিনেত্রী চমককে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি প্রদান করা হয়। তবে এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিল না ডিরেক্টরস গিল্ড। সংগঠনের নেতারা গত ২১ আগস্ট একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে চমককে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন তারা। এদিকে ডিরেক্টরস গিল্ডের এই সিদ্ধান্তে অভিনয় শিল্পী সংঘ ও টেলিপ্যাব সন্তুষ্ট নয়।বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে সংগঠন দুটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, "ডিরেক্টরস গিল্ডের সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা আমাদের বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে। দীর্ঘ দিনের পুরোনো একটি সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের কাছ থেকে যা মোটেই আমরা প্রত্যাশা করি না। যেহেতু সংবাদ সম্মেলনে টেলিপ্যাব ও অভিনয়শিল্পী সংঘের নাম উচ্চারিত হয়েছে, তাই প্রাসঙ্গিক কারণেই কিছু কথা আমাদের বলতে হচ্ছে। যা আমরা কখনোই সর্বসাধারণের সম্মুখে বলতে চাইনি!"
আরও বলা হয়, "প্রথমত ডিরেক্টরস গিল্ড একজন অভিনয়শিল্পীকে নিষিদ্ধ করার অধিকার রাখে কিনা? যদি তারা তাদের সদস্যদেরকে চমককে কাজে না নেওয়ার নির্দেশ দিতে চাইত, তবে তা সাংগঠনিকভাবে করতে পারত। এর জন্য সংবাদ সম্মেলনের প্রয়োজন ছিলো কিনা? এটা খুবই সাধারণ বিষয় যে, একটি পেশাদার সংগঠন শুধু তার সংগঠনের সদস্য ছাড়া অন্য কোনও পেশার শিল্পী, কুশলী বা ব্যাক্তিকে শাস্তির আওতায় আনতে পারে না! নিতান্ত প্রয়োজন হলে সেই পেশার সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। সংগঠন কোনও কোর্ট-কাচারি, আইন-আদালত নয়। সংগঠনকে সদস্যরা ভয় পাবে না; ভালোবাসবে, নিরাপদ আশ্রয় মনে করবে। কেউ কেউ কখনও কখনও ভুল করতে পারে, অন্যায় করতে পারে। আমরা তাকে সংশোধনের চেষ্টা করবো, সঠিক পথ বাতলে দেওয়ার চেষ্টা করবো। কিন্তু কখনোই গলা টিপে ধরবো না। ভুল শুধরে নেয়ার, সংশোধন হওয়ার যথেষ্ট সময়, সুযোগ পাওয়া স্বত্বেও কেউ যদি সংশোধন না হয়, তখন হয়তো সংগঠন কঠোর হতে পারে। তার আগে নয়।"
এরপর সংগঠন দুটি বলে, "চমকের বিরুদ্ধে ডিরেক্টরস গিল্ড যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তাদের ব্যক্তিগত। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই; আমাদের সিদ্ধান্তে চমকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কোনও কথা নেই।"
দীর্ঘ এ বিজ্ঞপ্তির শেষের দিকে বলা হয়, "আমরা আমাদের অভিভাবক ফেডারেশন এফটিপিও’র সভাপতি মামুনুর রশিদ ও সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন লাভলুর সাথে কথা বলেছি। সভাপতি মহোদয় দেশের বাইরে থাকায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর এফটিপিও’র সঙ্গে সভা হবে। সেখানে এই এ বিষয়ে আলোচনা হবে। আশা করি এফটিপিও একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান দেবেন।"
রেডিওটুডে নিউজ/এসবি