পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলসহ দুই পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চরগড়গড়ি আলহাজ মোড় (জগির মোড়) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে মক্কেল মৃধা, মনিরুল ইসলাম, লালন মৃধা, আলীম হোসেন বাঁধনের নাম পাওয়া গেছে। আহতদের ঈশ্বরদী ও পাবনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও দুই দলের নেতাকর্মীরা জানান, বুধবার জামায়াতের ওয়ার্ড সভাপতি হাফেজ ইকবাল হোসেনসহ দুইজনকে মারধর করে সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের আহবায়ক মক্কেল মৃধার লোকজন। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল চরগড়গড়ি আলহাজ্ব মোড়ে পাবনা-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ করে নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি দলের নির্বাচনী প্রচার চালানো হয়। সেখানে বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। আবু তালেবের গাড়িসহ তারা ২০-২৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
এ সময় দুপক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুরো এলাকায় দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে গুলিবর্ষণ করা হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নেভায়। এতে দুপক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পাবনা-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আমরা চরগড়গড়ির আলহাজ্ব মোড়ে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের অনুসারী মক্কেল মৃধার নেতৃত্বে আমাদের ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। তিনি দাবি করেন, ‘আমার গাড়িসহ আমাদের শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তারা। এতে ৬০-৭০ জন আহত হয়েছেন।’
অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা-৪ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, জামায়াতের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হামিদুর রহমান হামদু মেম্বার বলেন, জামায়াতের লোকজনই আমাদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে। তাদের হামলায় সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের আহবায়ক মক্কেল মৃধা, তার ছেলে মনিরুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য লালন মৃধা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আলীম হোসেন বাঁধনসহ ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুন নূর বলেন, রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় অভিযোগ বা মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

