সোমবার,

০৬ মে ২০২৪,

২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সোমবার,

০৬ মে ২০২৪,

২৩ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

পাহাড়ি ঢল-বর্ষণের পানি থেকে রক্ষা পেতে বাঁধ খুলে দিচ্ছে ভারত

রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৩০, ৪ অক্টোবর ২০২৩

আপডেট: ১৪:৩১, ৪ অক্টোবর ২০২৩

Google News
পাহাড়ি ঢল-বর্ষণের পানি থেকে রক্ষা পেতে বাঁধ খুলে দিচ্ছে ভারত

তিস্তা ব্যারেজ (ফাইল ছবি)

তিস্তা নদীর উজানে গজলডোবায় ব্যারেজ নির্মাণ করে ভারত একতরফা ভাবে পানি প্রত্যাহারেই নয়, বর্ষামৌসুমে পাহাড়ি ঢল, বর্ষণের পানি থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য বাঁধ খুলে দিচ্ছে । পাহাড়ি ঢল বা বন্যার আগাম খবরও বাংলাদেশকে না জানানোর কারণে বন্যায় ভিটে-মাটিসহ স্বর্বস্ব হারাচ্ছে তিস্তা অববাহিকার মানুষ।

দুই দেশের মধ্যে একটি যৌথ নদী কমিশন থাকলেও ভারতের বৃষ্টিপাত বিশ্লেষণ করে পাহাড়ি ঢল-বন্যার ধারণার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ২০২১ সালে একদিনের আচমকা বন্যার পানিতে ভেসে যায় তিস্তা তীরবর্তী গ্রামগুলো।

আগে থেকেই ঢলের খবর জানতে না পারায় কোন কিছুই রক্ষার সুযোগ পায়নি তিস্তা পারের হাজার হাজার মানুষ। ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের ৫৪টি গেটের সব ক’টি খুলে দেয়ায় লালমনিরহাটের দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দেয়ার পরও ফ্লাডবাইপাসের ফ্লাডফিউজ ভেঙ্গে প্রবলবেগে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। সেবারের ফ্লাডবাইপাস বিধ্বস্ত হওয়ার অনেক ক্ষতি এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে নদী পাড়ের মানুষরা।

রিভারাইন পিপলের পরিচালক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান,এখনও পাহাড়ি ঢল বা নদীর পানিবৃদ্ধির আগাম খবর জানতে পারে না তিস্তাপারের মানুষ। শুষ্ক-মৌসুমে ফসলহানি আর ঢল-বন্যার আশঙ্কায় কাটে পুরো বর্ষাকাল। সেক্ষেত্রে নদী পাড়ের মানুষের আগাম কোন খবর না পাওয়ায় তাদের চাষের পিয়াজ, রসুন, বাদাম সবকিছুই পানির মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছে প্রতিবছর। এতে করে প্রতিবছর চরাঞ্চলের কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, প্রতি বছর তিস্তা অববাহিকার নীলফামারী, রংপুর, লালমনিহাট,কুড়িগ্রাম ওসাইবান্ধা জেলার শত শত মানুষ তাদের বাড়ী-ঘর ফসলি জমি হারিয়ে মানবতের জীবন যাপন করছে। এতে কওে এঅঞ্চলে বাড়ছে দারিদ্রের হার। তাই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করছেন।

তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী জানান,অস্থায়ী একটি চুক্তির ভিত্তিতে ভারত সরকার গজলডোবা ব্যারেজ থেকে রেডিও লিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বন্যার আগাম খবর জানাতো। কিন্তু গত ২৫ বছর ধরে এই খবর বাংলাদেশকে তারা জানাচ্ছে না। ফলে ওই অঞ্চলের বৃষ্টিপাত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে কখন এই নদীর পানি বাড়তে পারে, কখন কমতে পারে।
আমরা চাই বন্ধু প্রতিম দেশ ভারত আগে রেডিও লিংক বা কোন ডিভাইসের মাধ্যমে বন্যার আগাম খবর জানালে এ দেশের মানুষ কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব হবে।

এদিকে রংপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, মর্ডান টেকনোলজির মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ সুদৃঢ়ভাবে বা খুব দ্রুত তথ্যের আদান-প্রদান সম্ভব হলেই দুর্ভোগ গুলো কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

হিমালয় থেকে নেমে আসা তিস্তা নদীতে সাড়ে ৪ লাখ কিউসেক পানি নিঃস্মরণ ক্ষমতার তিস্তা ব্যারেজ সেচপ্রকল্প বাংলাদেশ নির্মাণ করে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের দোয়ানীতে। আর এর ঠিক ৭২ কিলোমিটার উজানে ভারত সাড়ে ৬ লাখ কিউসেক পানি নিঃস্মরণ ক্ষমতার গজলডোবা ব্যারেজ নির্মাণ করে একতরফা ভাবে এই নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে করে বন্যার সময় অতি বন্যা আর শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে তিস্ত নদী মরুভুমিতে পরিনত হচ্চে। ফলে তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ বন্যা আর শুস্ক মৌসুমে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

রেডিওটুডে নিউজ/এসবি

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের