
বরিশালের সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেছেন আসপিয়া ইসলাম। গত ১৫ বছর ধরে উপজেলার খুন্না-গোবিন্দপুর গ্রামের একজনের জমিতে আশ্রিত হিসেবে পরিবারসহ বাস করে আসছিলেন তিনি। বাবা সফিকুল ইসলাম মারা গেছেন আগেই। পরিবারে এখন আছেন তারা তিন বোন, এক ভাই ও মা। ভাই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার আয় দিয়েই চলে সংসার।
তবে অভাবের এই সংসারে এবার খুশির খবর কড়া নাড়ছিলো। পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরির জন্য সব ধাপ পার করেছেন আসপিয়া। কিন্তু, হঠাৎ জানা গেলো সেই কাঙ্খিত চাকরিটা আর হচ্ছে না। কিন্তু কেন?
কারণ জানতে ডিআইজি এসএম আকতারুজ্জামানের কার্যালয়ে ছুটে যান আসপিয়া। আকতারুজ্জামানের জানান, নিজেদের জমি না থাকলে চাকরি দেওয়ার আইন নেই। তাই জমি না থাকায় সব কিছুতে উত্তীর্ণ হলেও চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠেনি তার। এই উত্তর দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে পুলিশ লাইন্সের সামনে বসে থাকতে দেখা যায় আসপিয়াকে।
আসপিয়া জানান, বরিশাল জেলায় পুলিশে কনস্টেবলের শূন্য পদে লোক নিতে সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। গতমাসে জেলা পুলিশ লাইনে শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর অংশ নেন লিখিত পরীক্ষায়। লিখিত পরীক্ষাও উত্তীর্ণ হন। এরপর ২৪ নভেম্বর একই স্থানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আসপিয়া। সবশেষ ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। সেখানেও টিকে ছিলেন আসপিয়া। কিন্তু চূড়ান্ত নিয়োগের আগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসপিয়া ও তার পরিবারকে ‘ভূমিহীন’ উল্লেখ করা হয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার বরাবর প্রতিবেদন জমা দেন হিজলা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আব্বাস। এর আগে ভূমিহীন হওয়ায় (স্থায়ী ঠিকানা না থাকায়) তার চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
রেডিওটুডে নিউজ/ইকে